প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ আগস্ট, ২০১৮

দিন ঘনিয়ে আসায় জমে উঠছে জেলার পশুর হাট

দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে অভিযোগ থাকলেও পছন্দের পশুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতা

ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠছে জেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো। এছাড়া বাড়িতেও কেনাবেচা হচ্ছে পশু। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ

টাঙ্গাইল : জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র মতে, এবার টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় ৪৫ হাজার গরু ছাগলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার গরু ছাগল মজুদ রয়েছে। এবার জেলায় ৯ হাজার ৩৪৫ জন পরিবার গরু ও ছাগল লালন-পালন করছেন। আর সপ্তাহের প্রতিদিনই টাঙ্গাইলের অনেক স্থানে পশুর হাট বসছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বসানো হয়েছে বিশেষ হাট। এমনকি ফ্ল্যাড লাইট জ্বেলে রাত ১২টা পর্যন্ত চলছে গরু বিক্রি।

এছাড়া মির্জাপুরের গরুর হাটে কোরবানির পশু জায়গা না হয়ে আশপাশের এলাকাতেও পশু বেচাকেনা হচ্ছে। স্থানীয়রা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারিরা পশু বিক্রির জন্য হাটের ইজারা নিয়ে এসেছেন।

বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম দিকে ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে পশুর দামদর যাচাই করেছিল। তবে এখন কোরবানির পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। ক্রেতারা হাট থেকে গরু কিনছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এস এম আউয়াল হক বলেন, জেলার প্রতিটি উপজেলায় ২টি করে মোট ২৪টি টিম কাজ করছেন। এতে প্রায় ১৪৯ জন লোক কাজ করছেন। বিভিন্ন হাটে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ক্যামগুলো গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ তদারকির কাজ করছে।

ঝালকাঠি : আনুষ্ঠানিকভাবে জেলায় কোরবানি উপলক্ষ্যে পশুর হাট জমে ওঠার পাশাপাশি খামারিদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন পশু ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে ৫৫০ জন ব্যক্তির অধীনে ৪৫০০ গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। কোরবানি উপলক্ষ্যে এ জেলায় মোট কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার।

ব্যবসায়ী (পাইকার) মো. মনির খান জানান, ভারতের গরু না আসায় এখন দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশি। তাই গ্রামে গ্রামে খোঁজ নিয়ে কয়েকটি গরু কিনেছি কোরবানির হাটে বিক্রি করার জন্য। রাজাপুর বাগড়ি হাটের ইজারাদার মো. ইলিয়াস সিকদার জানান, কোরবানির হাট এখনো জমে উঠেনি। যার জন্য হাটে গরুর আমদানি এখনো শুরু হয়নি। তবে তিনি আশা করেন ঈদের আগের তিন দিনে ২ থেকে ৩ কোটি টাকার গরুসহ কোরবানির জন্য অন্যান্য পশু বিক্রি হবে।

দিনাজপুর : কোরবানির জন্য জেলায় প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিনুর আলম জানান, জেলার ১৩ উপজেলায় সর্বমোট ৬০ হাজার ৪৩০ জন গবাদি হৃষ্টপুষ্টকারী বা খামারি রয়েছেন।

এদিকে জেলার ১৩ থানার পশুর হাটে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও চড়া মূল্যের কারণে অনেকেই কোরবানির গরু কিনতে পারছেন না। তবে বিক্রেতারা বলেন, এবার গরুর দাম একটু বেশি হলেও অতিরিক্ত নয়। এদিকে পশু বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে গত বছরের তুলনায় এবার ফ্রিজ বিক্রি বেড়েছে।

ভোলা : ভোলার বড় হাটগুলোর মধ্যে গরুরহাট, গজারিয়া, ইলিশা, পরানগঞ্জ, বাংলাবাজার, ঘুইংগারহাট, লালমোহন, চরফ্যাশন ও বোরহানউদ্দিন অন্যতম। শুক্রবারের পর থেকে জমে উঠেছে এই হাটগুলো। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব আরো বাড়বে বলে মনে করছে ইজরাদাররা।

সদর উপজেলা পশু কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রতিটি বাজারেই ক্যাম্প বসানো হয়েছে। যাতে কেউ ফাঁকি দিয়ে রোগাক্রান্ত অসুস্থ গরু বিক্রি করতে না পারে। ভোলার পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন বলেন, পশুর হাটে জাল টাকার মেশিন বসানোর পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পশুর হাটে ক্রেতা, বিক্রেতা ও ইজারাদারদের নিরাপত্তায় পুলিশ ফোর্স মাঠে রয়েছে।

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন উত্তর পাশের মাঠে জমে ওঠা পশুর হাটে মোটা তাজাকরণ গরু, ছাগল বেচাকেনায় মুখরিত দেখা গেছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এ হাটে পশু আমদানি হয়। ঈদের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিদিন এ হাট বসবে বলে আয়োজকদের সূত্রে জানা যায়।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৃহত্তম এই পশুর হাট ছাড়াও গোহাটা কালিবাড়ী, নিজড়া, মাঝিগাতী, হরিদাশপুর পশুর হাটে ঈদকে সামনে রেখে সবচেয়ে বেশি গরু আমদানি হয়। বেচাকেনাও হয় প্রচুর। চাঁদরাত্র পর্যন্ত চলবে এ বেচাকেনা।

ফরিদপুর : ফরিদপুরে পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বৃহত্তর ফরিদপুরের সর্ববৃহৎ টেপাখোলা পশুর হাট ও চরাঞ্চলের মানুষের আফজাল মন্ডলের পশুর হাটসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারের চলছে কোরবানির পশু বেচাকেনা ধুম। ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা পশুর হাটে পার্শবর্তী কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ আশপাশের জেলার ক্রেতা-বিক্রেতারা এসে গরু ক্রয় ও বিক্রয় করেন।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, সরকারি তালিকাভুক্ত জেলার সব বাজারের আমাদের মেডিক্যাল টিম কাজ করছে, আমরা চেষ্টা করছি সুস্থ ও সবল পশু হাটগুলোতে বেচা-কেনা হোক। আমাদেও এ কার্যক্রম ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলবে।

হবিগঞ্জ : ক্রেতা-বিক্রেতার পদভারে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে হবিগঞ্জের কোরবানির পশুর হাট। ক্রেতারা তাদের চাহিদা মত ছাগল ভোড়া ও গরু ক্রয় করছেন। বিক্রেতারা জানান, মাঝারি সাইজের দেশীয় গরুর চাহিদা বাজারে এখন অপেক্ষাকৃত বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. এ জেড এম ওয়াহিদুল আলম জানান, কোরবানির ঈদে যাতে করে কোন অসাধু গরু বিক্রেতা বাজারে রোগা গরু আনতে না পারে সে জন্য সার্বক্ষণিক জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বাজার মনিটরিং করছেন।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, টাউড বাটপাররা যাতে করে জাল টাকা ছড়াতে না পারে সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকদারী গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও মাঠে কাজ করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close