মিনহাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৪ মার্চ, ২০২০

চট্টগ্রামে আসামি ছাড়াই চলছে বিচারিক কার্যক্রম

দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিদিন। এর মধ্যে দু-চারটি দেশ ছাড়া প্রায় সব কটি দেশের সঙ্গে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা দেশে সাত দিন বিপণিবিতান ও মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে দেশের অভ্যন্তরে কয়েকটি উপজেলা। করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের আদালতগুলোতে লোকসমাগম সীমিত করার অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এ নির্দেশনা জারি করেছেন। আদালতের এমন সিদ্ধান্তের ফলে আদালতপাড়া হয়ে পড়েছে প্রিজনভ্যানমুক্ত। আদালতপাড়ায় নেই প্রিজনভ্যানের গর্জন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার ও আদালতের প্রসিকিউশন শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে প্রতিদিন চট্টগ্রাম কারাগার থেকে গড়ে ৪৫০ জন আসামিকে আদালতে আনা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার অংশ হিসেবে গতকাল একজন আসামিকেও কারাগার থেকে আনা হয়নি। তবে বিভিন্ন থানা-পুলিশের হাতে গ্রেফতার আসামিরা বিভিন্ন আদালত থেকে কারাগারে গেছে বিচারকের আদেশে। গত ১৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. আলী আকবর এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছেন। সার্কুলারে বলা হয়, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-জনিত উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে কারাগার থেকে কারাবন্দি আসামিদের জামিন শুনানিকালে এবং মামলার অন্যান্য কার্যক্রমে আদালতে উপস্থিতকরণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমতাবস্থায় জামিন শুনানিকালে এবং মামলার অন্যান্য কার্যক্রমে কারাগার থেকে কারাবন্দি আসামিদের প্রিজনভ্যান অথবা অন্য কোনোভাবে আদালত কক্ষে হাজির করা যাবে না। কারাবন্দি আসামিদের কারাগারে রেখে জামিন শুনানি করতে হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মামলার কার্যক্রম মুলতবি করতে হবে।

এদিকে কয়েক দিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে গিয়ে দেখা যায়, আদালতগুলো আসামিশূন্য। করোনাভাইরাসের কারণে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে আদালতগুলোতে আসামিদের সঙ্গে সঙ্গে বিচারপ্রার্থী মানুষের উপস্থিতিও নেই। নিয়মিত হাজিরা, জামিন শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরাসহ অন্যান্য বিচারিক কার্যক্রম উপলক্ষে কোনো আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তবে আদালতের কার্যক্রম সীমিত করার পাশাপাশি আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন তারা। সিএমপির সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর জেল থেকে আদালতে কোনো প্রিজনভ্যান করে আসামি কোর্টে হাজির করা হয়নি। এ সিদ্ধান্ত করোনাভাইরাস ঠেকাতে ভূমিকা রাখবে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোকতার আহমদ বলেন, আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আদালতের কার্যক্রম সীমিত করার আবেদন ছিল। উচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্ত আদালতের কার্যক্রম সীমিত করারই অংশ। আশা করি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সুপ্রিমকোর্ট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close