হাসান ইমন

  ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮

কবে হবে ডিএনসিসির ইউটার্ন কেউ বলতে পারে না

সরকারের অন্যান্য সংস্থার কাছ থেকে জমি ব্যবহারের ছাড়পত্র না পাওয়ায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ ইউটার্ন নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কখন কাজ শুরু হবে জানেন না খোদ কর্মকর্তারাও। শুরুতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন সংস্থাগুলো জমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ চাচ্ছে। ফলে সাতরাস্তা থেকে উত্তরা পর্যন্ত ১১ ইউটার্ন নির্মাণ হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইউটার্নগুলো নির্মাণ করতে ৩৭ দশমিক শূন্য ৯ বিঘা জমির প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে সড়ক ও জনপথের ৩১ দশমিক ২৫ বিঘা, রেলওয়ের ১ দশমিক ৬১ বিঘা এবং সিভিল এভিয়েশনের ১ দশমিক ৮৩ বিঘা জমি রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংস্থাগুলোর কাছে জমি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলে তাদের কাছ থেকে একধরনের নীতিগত অনুমোদনও মেলে। কিন্তু গত ৪ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএম কনস্ট্রাকশনস এগুলো নির্মাণের কাজ শুরু করলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাধায় আটকে যায়। বর্তমানে উত্তরার র?্যাব-১-এর কার্যালয় ও রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স বাদে বাকি নয়টি জায়গায় নির্মাণকাজ বন্ধ আছে।

জানা গেছে, আনিসুল হক ডিএনসিসির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর গাজীপুর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সড়কের যানজট নিরসনের উদ্যোগ নেন। এজন্য ইউটার্ন নির্মাণের প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সেবা সংস্থা, মেট্রোরেল প্রকল্প, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এক পর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা পর্যন্ত ১১টি পয়েন্টে ইউটার্ন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো হলো তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, কোহিনুর কেমিক্যাল মোড়, মহাখালী বাস টার্মিনাল, মহাখালী ফ্লাইওভার, বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী, বনানী কবরস্থান, বনানী ওভারপাস, শ্যাওড়া, কাওলা, উত্তরার র‌্যাব-১ অফিসের সামনের সড়ক এবং জসিম উদ্দিন এভিনিউয়ের সামনে। কিন্তু সম্প্রতি সাতরাস্তা, তেজগাঁও, মহাখালী এবং বনানী এলাকায় কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই দেখা যায়নি। এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয় ২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৯ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেবে সরকার। বাকি চার কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেবে ডিএনসিসি। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। গত ২৯ অক্টোবর এসএম কনস্ট্রাকশনকে ইউটার্ন নির্মাণের কার্যাদেশ দেয় ডিএনসিসি। ঠিকাদার কাজ শুরুর পর থেকেই এসব বাধা সৃষ্টি করছে সওজ।

কাজটির অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, কাজটির জন্য সড়ক ও জনপথসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর কাছ থেকে জমি পাওয়ার একটা আশ্বাস আমরা পেয়েছিলাম। একধরনের সমঝোতার ভিত্তিতে কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কাজের জন্য মাঠে নেমে দেখা গেল কোনো কিছুই অনুকূলে নেই।

মাহবুব আলম আরো বলেন, এখন পর্যন্ত সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আমরা জমি বুঝে পাইনি। কবে পাব তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। অথচ এই জমিগুলো খালিই পড়ে আছে। কোনো ধরনের উচ্ছেদ কিংবা অধিগ্রহণের প্রয়োজন নেই।

ডিএনসিসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইউটার্নগুলো তৈরি হলে এই বিমানবন্দর সড়কের যানজট প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ কমে যাবে। দুই ধরনের ইউটার্ন নকশা করা হয়েছে। একটিতে ছোট-বড় দুই ধরনের যানবাহনই চলবে, অন্যটিতে শুধু ছোট গাড়ি চলবে। একটি ইউটার্ন থেকে আরেকটি ইউটার্নের সর্বনিম্ন দূরত্ব হবে ৮০০ মিটার আর সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার। এসব ইউটার্ন দিয়ে গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারবে। ফলে তখন বিভিন্ন মোড়ে কোনো ট্রাফিক পুলিশেরও প্রয়োজন হবে না।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, গত বছর ৩০ নভেম্বর আরেকটি চিঠি এলজিআরডি সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছিল। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ইউটার্ন নির্মাণে নতুন একটি প্রস্তাবনা দিতে বলা হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ২৫ কোটি টাকার মধ্যে সরকার দিচ্ছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। বাকি টাকা সিটি করপোরেশন অর্থায়ন করছে। ডিএনসিসি পরিকল্পনা কমিশনে ইউটার্ন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠায় ২০১৬ সালের নভেম্বরে। একই বছরের ডিসেম্বরে কাজ শুরু করার কথা প্রস্তাব করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist