ক্রীড়া ডেস্ক

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪

জোকোভিচকে থামিয়ে ফাইনালে সিনার

এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আর দেখা যাবে না ৩৬ বছরের নোভাক জোকোভিচকে। ১০ বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনজয়ী হেরে গেলেন ২২ বছরের ইয়ানিক সিনারের বিরুদ্ধে। জোকোভিচ হারলেন ১-৬, ২-৬, ৭-৬ (৮-৬), ৩-৬ সেটে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকার। এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শীর্ষ বাছাইও ছিলেন তিনি। চতুর্থ বাছাই সিনার হারিয়ে দিলেন জোকোভিচকে।

সেমিফাইনালের শুরু থেকেই পিছিয়ে গিয়েছিলেন জোকোভিচ। প্রথম সেটে তিনি হারেন ১-৬ গেমে। দ্বিতীয় সেটে জোকোভিচ হেরে যান ২-৬ গেমে। তখনই মনে করা হয়েছিল জোকোভিচ হেরে যাবেন। কিন্তু তৃতীয় সেটে ফিরে আসেন তিনি। টাইব্রেকারে জিতে নেন সেই সেট। অনেক ম্যাচেই জোকোভিচকে দেখা যায় প্রথম বা দ্বিতীয় সেট হারলেও ম্যাচ জিতে নিয়েছেন। কিন্তু গতকাল শুক্রবার সেটা হলো না। চতুর্থ সেট হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেন জোকোভিচ।

এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুই হয়েছিল অঘটন দিয়ে। ভারতের সুমিত নাগাল হারিয়ে দিয়েছিলেন বাছাই খেলোয়াড় অ্যালেক্সান্ডার বুবলিককে। বিদায় নিয়েছেন বিশ্বের দুই নম্বর টেনিস খেলোয়াড় কার্লোস আলকারাজ। ২০ বছরের স্প্যানিশ তরুণকে আগামী দিনের তারকা মনে করা হচ্ছে। তাকে হারিয়ে দেন অ্যালেক্সান্ডার জেরেভ। তবে সব থেকে বড় অঘটন ঘটল গতকাল। জোকোভিচকে হারিয়ে আলোচনায় চলে এলেন সিনার।

প্রথমবার কোনো গ্র্যান্ডস্ল্যামের ফাইনালে উঠলেন সিনার। ২২ বছরের ইতালিয়ান তরুণ বিশ্বের চার নম্বর। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির দীর্ঘকায় এই টেনিস খেলোয়াড় গতকাল যখন একের পর সেট জিতছেন, তখন তার মুখে কোনো আবেগের রেশ ছিল না। জোকোভিচকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেও বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস দেখাননি। ২৪টি গ্র্যান্ডস্ল্যামজয়ী জোকোভিচও নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। তিনি নিজেও বুঝতে পারছিলেন সেটা। হারতে পছন্দ করেন না জোকোভিচ। সেই তিনিই একটি পর একটি পয়েন্ট খোয়াচ্ছিলেন ডাবল ফল্ট করে। বিপক্ষকে জায়গা দিচ্ছিলেন খেলার। অন্যান্য ম্যাচে পয়েন্ট হারালে কোর্টের মধ্যে চিৎকার করতে দেখা যায় জোকোভিচকে। টেনিস র‍্যাকেট হাতে বিপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়াই অভ্যাস তার। কিন্তু গতকাল সেসব কিছুই হলো না। জোকোভিচকে শান্ত দেখাল এদিন। ম্যাচ হেরে সিনারের সঙ্গে হাসিমুখে হাত মিলিয়ে বের হয়ে যান কোর্ট থেকে।

১৯৯৯ সালে সেমিফাইনালেই হেরে গিয়েছিলেন মনিকা সেলেস। তার আগে জিতেছিলেন টানা ৩৩টি ম্যাচ। জোকোভিচও গতকালের আগ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে টানা ৩৩টি ম্যাচ জিতেছেন। ওপেন যুগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে টানা ম্যাচ জেতার সর্বোচ্চ নজির এটাই। ফলে নিজের আদর্শকে টপকে নতুন রেকর্ড গড়া হলো না জোকারের। অক্ষত থেকে গেল ২৫ বছর আগের রেকর্ড। কোয়ার্টার ফাইনালে জেতার পর জোকোভিচকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সার্বিয়ারই (পরে আমেরিকার বাসিন্দা) সাবেক খেলোয়াড় মনিকা সেলেসের রেকর্ডের কথা। জোকোভিচ বলেন, ‘সেলেস আমার ছোটবেলার অন্যতম নায়ক। আদর্শ। সেলেসের খেলা মন দিয়ে দেখতাম। ওর খেলা দেখেই আমার টেনিস শেখা। খেলোয়াড়জীবনে সেলেসের সব কিছুই ছিল টেনিসকে ঘিরে। আমি সেটাই রপ্ত করার চেষ্টা করেছি। প্রথম যখন সেলেসের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। যদিও সেলেস আমার ভাষাতেই কথা বলেছিলেন। কারণ তারও জন্ম সার্বিয়াতেই। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সেলেসের রেকর্ড দেখার মতো। তার মতো খেলোয়াড়ের রেকর্ডের সঙ্গে আমার নাম জুড়ে যাওয়ায় দারুণ লাগছে। আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close