ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০১ জুন, ২০২০

ক্রিকেটের তালা এখনই খুলছে না

প্রায় ৩ মাস হতে চলেছে। অথচ দেশে করোনা পরিস্থিতির সিকিভাগ উন্নতিও নেই। বরং দিনকে দিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। গতকাল তো প্রাণহানির সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। এমন উদ্বেকজনক পরিস্থিতিতেই সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নিয়েছে সরকার। রোববার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানই সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে। সড়কে যানবাহনও নেমেছে আজ থেকে। বলা যায়, স্বাভাবিক কর্মকা-ে ফিরেছে দেশ।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠতেই পারে, অন্যান্য সেক্টরের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) কি তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে খেলা ফেরাতে যাচ্ছে? না, এই মুহূর্তে এমন কোনো সংবাদ দিতে পারেননি বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। বরং দেশের করোনা পরিস্থিতি আমলে নিয়ে মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে কোনো রকম তাড়াহুড়ো করতে রাজি নন তিনি।

এর পেছনে নিজাম উদ্দিন কারণ জানিয়েছেন দুটি। প্রথমত, যদি কোনো ক্রিকেটার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব পুরোটাই বোর্ডের ওপরে বর্তাবে। দ্বিতীয়ত, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সবই কমবেশি অর্থনৈতিক কর্মকা- ও জাতীয় উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যা এই মুহুর্তে দেশের অর্থনীতির চাকা সচলে অতি জরুরি। পক্ষান্তরে ক্রিকেট কিন্তু তা নয়, স্রেফ বিনোদনেরই একটি অনুষঙ্গ মাত্র। দেশের এমন পরিস্থিতিতে মাঠের বিনোদন মোটেও কাম্য নয়।

তবে হ্যাঁ, যেহেতু বাংলাদেশের ক্রিকেট আন্তর্জাতিক পরিম-লে বিচরণ করে থাকে, সেহেতু বিসিবির ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনাও আছে। করোনা শেষ হলেই কেবল তা নিয়ে ব্যস্ততা দেখা যাবে। নিজাম উদ্দিনও এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেননি। তার মতে, বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিসিবিও ক্রিকেট ফেরাতে মুখিয়ে আছে। তবে এর সবই তারা করতে চাইছেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণপূর্বক ধীর গতিতে, সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং আইসিসির গাইডলাইন মেনে।

কাল গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটা ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর জন্য নয়। এটা হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে নির্দেশনা। খেলা কিন্তু মানুষের জীবনের অনেক পরের একটি অংশ। এটা বিনোদনের অংশমাত্র। এদেশের ১০ ভাগ মানুষের জন্যও খেলা এখন গুরুত্বপূর্ণ না। মানুষ এখন আউটডোর ইন্টারটেইনমেন্টের কথা ভুলেও ভাবছে না। বরং কী করে সুস্থ থাকা যায়, সেটা নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন। তবে আমরা অবশ্যই ভাবছি কী করে খেলা ফেরানো যায়। কেননা আমাদের ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনা (এফটিপি) আছে, প্রিমিয়ার লিগ আছে। এর সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা আছে।’

এখন থেকে সবকিছুই হবে আইসিসির গাইউলাইন মেনে। সে কথাও জানিয়ে দিলেন বিসিবির অন্যতম এই শীর্ষ কর্তা, ‘আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। প্রথমে আমরা অফিস প্রস্তুত করব। জীবাণুনাশ করতে যা যা করা প্রয়োজন, করব। খেলোয়াড়দের অনুশীলন সুবিধা শতভাগ নিশ্চিত করতে যা যা করার, সেগুলো করব। এগুলো প্রস্তুত করার পরে যদি বাস্তব পরিস্থিতি বলে যে আমরা অনুশীলন শুরু করতে পারব, তাহলে আইসিসির প্রটোকল মেনে, তাদের অনুসরণ করে এবং অন্যান্য দেশ কিভাবে ক্রিকেট ফেরাচ্ছে, তা দেখে কাজ শুরু করব। এখানে তাড়াহুড়ো করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এই দায়-দায়িত্ব ক্রিকেট বোর্ডের ওপরই বর্তাবে।’

এদিকে, সাধারণ ছুটি উঠে যাওয়ায় অনেকেই ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন ৩১ মে থেকে বিসিবিও বুঝি স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম চালু করবে। তাদের জন্য নিজাম উদ্দিনের বক্তব্য, ‘বিসিবি কখনোই বন্ধ থাকেনি। সবাই বাসা থেকেই কাজ করছে। অতএব চালু করা বা বন্ধ করার কোনো অবকাশ এখানে নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close