আরিফ সোহেল

  ০৬ জুলাই, ২০১৯

সেমিফাইনালের ছক এঁকেই ভারত নামছে

চাপমুক্ত ভারত দারুণ ফুরফুরে আর ইতিবাচক। ঠিক তেমন আবহই টিম হোটেলে। ভক্তদের সেলফির আবদার হাসি মুখেই মেনে নিচ্ছেন বিরাট-রোহিত-বোমরা-সামিরা। হেডিংলেতে ভারতের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার হারার ভয় নেই। তবে জিতলে অনেক কিছুই হতে পারে।

বিশ্বকাপের নকআউটের শেষ ম্যাচে জয়-পরাজয় যা-ই হোক না কেন; ভারত আছে খোশ মেজাজেই। সঙ্গে ভারতের কাছে এই ম্যাচ মোমেন্টাম ধরে রাখার ম্যাচ, সেমিফাইনালের আগে শেষবার নিজেদের ঝালাই করে নেওয়ার ম্যাচ।

সুতরাং ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন, ‘সেমিফাইনালের ড্রেস রিহার্সেলটা আমরা সেরে নিতে চাই। শ্রীলঙ্কাও যথেষ্ট শক্তিশালী দল। তাদের হারাতে হলে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই মাঠে খেলতে হবে।’

ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের মাঠে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচে হারানোর কিছু নেই। কিন্তু জিতলে অনেক কিছু পাওয়ার আছে। র‌্যাঙ্কিংয়ে একেবারে তলানিতে পৌঁছে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিল শ্রীলঙ্কা। ভারতকে আজ হারাতে পারলে শ্রীলঙ্কা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫ নম্বরে উঠে আসবে। শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক এই ম্যাচটিকে শুধু নিয়মরক্ষার ম্যাচ হিসেবেই দেখছেন না। বরং অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্মে বলেছেন, ‘শেষ ম্যাচে আমাদের টার্গেট। যা টিম শ্রীলঙ্কাকে অনেকটাই এগিয়ে নেবে।’

ভারত সতর্ক অন্য কারণে। দুই বছর আগে ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ লিগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কা হারিয়ে দিয়েছিল ভারতকে। এবারও এই হেডিংলেতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টুনার্মেন্ট জমিয়ে দিয়েছে করুনারতেœর টিম। তবে সেই সেøা উইকেট আজকের ম্যাচে থাকার সম্ভাবনা নেই। কারণ, গত কয়েক দিন বৃষ্টি হয়নি লিডসে, ম্যাচের দিনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেই পূর্বাভাস।

প্রতি ম্যাচেই নড়বড় করছে ভারতের মিডল অর্ডার। রাহুল এখন ওপেনে। চোটের জন্য বাদ বিজয় শঙ্করও। ওপেনাররা তাড়াতাড়ি ফিরে গেলে কে হবেন বিরাটের সঙ্গী; তা নিয়ে ভাবতেই হচ্ছে। তবে বাঁহাতি রিষভ প্যান্টের আগমন বৈচিত্র্য এনেছে মিডল অর্ডারে। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ভালো শুরু দিলেও বড় ইনিংস গড়তে ব্যর্থ। দুই ম্যাচে ৮০ রান করে সাময়িক স্বস্তি দিলেও বড় ইনিংসের ক্ষেত্রে চিন্তা থাকবে।

স্পিনারদের বিরুদ্ধে ধোনির খারাপ ফর্ম আরো বেশি চিন্তায় রাখবে ভারতকে। কারণ সেমিফাইনাল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হলে রশিদ খান, মইন আলির বিরুদ্ধে খেলতে হতে পারে। পাশাপাশি ভারতের চার পেসার যেখানে ৩৬টি উইকেট তুলেছেন, দুই স্পিনার মিলে সেখানে নিয়েছেন মাত্র ১৬টি উইকেট।

পেসাররা ঠিক থাকলেও ছোট মাঠে ২ রিস্ট স্পিনার খেলানোর ভুল আর করবে না ভারত। ধরেই নেওয়া যায়, ইংল্যান্ডের সঙ্গে সেমিফাইনাল এজবাস্টনে হলে অনেক বেশি সতর্ক থাকবে বিরাটরা। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে বোমরাকে। প্রথম এগারোয় একটা ম্যাচেও জায়গা হয়নি রবিন্দ্র জাদেজার। নকআউটের আগে এই ম্যাচই তাকে খেলানোর শেষ সুযোগ। দিনেশ কার্তিককে বাংলাদেশ ম্যাচে খেলিয়ে লাভ হয়নি, অবশ্য একটা সুযোগে কিছু প্রমাণিত হয় না। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ফের কেদার ফিরবেন, না কার্তিককে খেলানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত নকআউটের আগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। যেই খেলুক, নকআউটে তাকেই খেলাতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। কাপ জিততে হলে বাকি তিনটি ম্যাচ। শ্রীলঙ্কার ম্যাচটা বাদ দিলে নকআউটে দুটি ম্যাচ জিততেই হবে।

ইতিহাস কাছে; কিংবা দূরে থাক, আজ ভারত নামবে জয়ের জন্য। তাতে ঠিক থাকবে তাদের ধারাবাহিকতা; থাকবে ছন্দ। এই শ্রীলঙ্কা, আর যাই হোক, ভারতকে চাপে রাখার মতো টিম নয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close