আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ জুলাই, ২০১৯

ইরানের পরমাণু চুক্তি বহাল রাখতে বৈঠকে বসছে ইউরোপীয় দেশগুলো

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি বহাল রাখতে বৈঠকে বসছে এতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলো। গতকাল সোমবার ব্রাসেলসে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা চালানো করা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, চুক্তি রক্ষায় নতুন পদক্ষেপ নিতে চান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।

২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই বছরের নভেম্বর থেকে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো চুক্তি বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান।

ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এ বছরের মে মাসে চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয় তেহরান। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। ৭ জুলাই সেই সময়সীমা শেষে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৫ শতাংশে উত্তীর্ণ করার ঘোষণা দেয় ইরান। ২০১৫ সালের চুক্তিতে এই মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি ছিল তেহরানের।

গতকাল সোমবার ব্রাসেলসে তিন ইউরোপীয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইরানকে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় উৎসাহিত করার চেষ্টা করা হয়। বৈঠক সামনে রেখে তিন দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে ওই চুক্তির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। সম্পর্ক নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে গভীর সমস্যায় পড়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এতে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করা, উত্তেজনা নিরসনের পথ খোঁজা এবং আবারও আলোচনা শুরুর সময় এসেছে।’ ‘ঝুঁকি এমন যেসব অংশীদারেরই থামার দরকার রয়েছে, আর নিজেদের কর্মকা-ের সম্ভাব্য পরিণতি বিচার করার প্রয়োজন রয়েছে’।

উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সেনা উপস্থিতির মধ্যে ১০ দিন আগে জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের একটি তেলের ট্যাংকার আটক করে ব্রিটিশ নৌবাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্যাংকারটি সিরিয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ ব্রিটেনের।

এর জেরে গত শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ওই ফোনালাপে তিনি বলেন, তেহরান যদি প্রতিশ্রুতি দেয় ট্যাংকারটি সিরিয়ায় যাবে না, তাহলে তা ছেড়ে দেবে যুক্তরাজ্য। তবে জারিফ তাকে জানিয়ে দেন নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী তেল বিক্রির অধিকার তেহরানের রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close