আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৮ মার্চ, ২০১৯

নিউজিল্যান্ডে হামলাকারীর টার্গেট ছিল তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, তুরস্ককে লক্ষ্যবস্তু বানাতে চেয়েছিল নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে হামলাকারী অস্ট্রেলীয় নাগরিক। তুরস্কের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সে হুমকিও দিয়েছে। গত শনিবার এক নির্বাচনী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ডের ওই হামলাকারীর তীব্র মুসলিমবিদ্বেষী ইশতেহারের ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করেন। মসজিদে হামলার অস্পষ্ট করে দেওয়া ফুটেজও দেখান তিনি।

রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেন, ওই হামলাকারী সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছে, ইউরোপে তুর্কিদের কোনো ঠাঁই নেই। এরই পূর্বে দুই দফায় সে তুরস্ক সফর করেছে। তার ওই সফর নিয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তুর্কিতে কাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা হবে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ক্রস (খ্রিস্টান ধর্ম) ও ক্রিসেন্টের (ইসলাম) মধ্যে ফের একটি সংঘাত চাই না। তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডের ওই হামলাকারী বলেছে, সে ইউরোপের মাটি থেকে তুর্কি মুসলমানদের উৎখাত করতে চায়। এরদোয়ান বলেন, ‘আমাদের ৫০ জন ভাই-বোনকে শহীদ করা এই দুষ্ট লোক বলছে, আমরা শুধু আনাতোলিয়ায় (তুরস্কের এশিয়া অংশ) থাকতে পারব। আমরা ইউরোপীয় অংশে যেতে পারব না। এ নিয়ে চিন্তা করার তুমি কে?’

এর আগে গত শুক্রবার এরদোয়ান বলেন, এই বন্দুকধারী আমাদের দেশ, আমাদের জাতি এবং আমাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে পশ্চিমা দুনিয়ার উচিত ইসলামবিদ্বেষের উত্থান রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এরদোয়ান বলেন, ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে অক্লান্ত শত্রুতা প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব। এই মুসলমানদের যে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করা হতো, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে সীমান্ত ছাড়িয়ে তা গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। এই হামলা প্রমাণ করেছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। ইসলামভীতি কেমন বিকৃত ও খুনি মানসিকতার জন্ম দেয়, তা এর আগেও আমরা দেখেছি। দুনিয়াজুড়ে এ ধরনের মানসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত। এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমাদের আরো বিপর্যয়ের খবর শুনতে হবে।’

মসজিদে হামলার আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে হামলাকারী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। সেখানে মোটা দাগে উঠে আসে মুসলিম বিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের মতো বিষয়গুলো। মুসলমানদের উসমানীয় খিলাফতের (বর্তমান তুরস্ক) বিরুদ্ধে তৎকালীন ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেছে সে। বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের মৃত্যুও কামনা করে হামলাকারী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close