বদরুল আলম মজুমদার

  ২৯ মার্চ, ২০২৪

ভারতীয় পণ্য বর্জনে কৌশলী বিএনপি

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে সরকারবিরোধী বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এ আহ্বানে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতারা। এটি নিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সরব। তবে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবস্থান স্পষ্ট করবে না বিএনপি। বিষয়টি নিয়ে অনেকটা কৌশলে এগোচ্ছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। গত সোমবার রাতে দলের নীতিনির্ধারণী সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরে দলের কৌশলী অবস্থানের বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে স্পষ্ট হয়।

জানা গেছে, সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারত ইস্যুতে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দেশের জনগণ, সরকার ও ভারতের বর্তমান অবস্থানের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণের কথা জানান নেতারা। তবে বৈঠকের একটি সূত্র জানায় বিষয়টি নিয়ে বিএনপি আর আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলবে না। যদিও অপর একটি সূত্র বলছে, আগামী বৈঠকে এটি নিয়ে আরো আলোচনা, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর এ বিষয়ে দলের অবস্থান ঠিক করবে বিএনপি। সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত নেতারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে ভারতের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। তবে প্রতিবেশী ও প্রভাবশালী রাষ্ট্র হওয়ায় কৌশলগত কারণে তারা এখনই ভারতের পণ্য বর্জনের আন্দোলনে দলগতভাবে সরাসরি অংশ নিতে চান না। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো গোষ্ঠী কিংবা জনগণ যদি ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেয়, তাহলে সেটি এড়িয়ে যাবে না বিএনপি।

এদিকে সম্প্রতি ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনের বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০ মার্চ নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সেই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একদল কর্মীকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে তার গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে দেন। তখন তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা সেই চাদর আগুন দিয়ে পোড়ান। পরে এ ঘটনার ব্যাখ্যায় রিজভী বলেন, ‘ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে তিনি তার ব্যবহার করা ভারতীয় চাদর ফেলে দিয়েছেন।’

বৈঠক সূত্র জানা যায়, ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই সদস্য বলেন, ‘আমরা ভারতের বিরোধিতা করব, কিন্তু কৌশল ঠিক করতে হবে। সেটা না করে যে যার মতো বক্তব্য দেওয়া উচিত হবে না।’ আলোচনার এ পর্যায়ে সদ্য কারামুক্ত এক নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারের বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘ আন্দোলন করেছি। সবসময় বড় আন্দোলনের সফলতাণ্ডব্যর্থতার মূল্যায়ন হয়। সে মূল্যায়ন আমরা করিনি। আমাদের উচিত আগে সে মূল্যায়ন করা, তারপর তার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা। আমরা যদি ভারতবিরোধিতা করি, তাহলে তার কৌশল কী হবে, সেটা নির্ধারণ করতে হবে। এটা নিয়ে আগামীতে পরিপূর্ণ আলোচনা হওয়া উচিত। তারপর কৌশল ঠিক করতে হবে।’

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করেছেন তারা। নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন বর্জনের ৪ মাসের মধ্যে সেই সরকারের অধীনে দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি যেসব কারণে ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি, সেগুলো এখনো বিদ্যমান। তবে স্বতন্ত্রভাবে দলের কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারের মতো কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিপক্ষে মত দেন স্থায়ী কমিটির এক সদস্য। তবে তার ওই বক্তব্যে অনেকেই সায় দেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close