নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ মার্চ, ২০২৪

হেঁটেই গন্তব্যে

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে রাজধানীর অনেক সড়কে ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই অনেক সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। দীর্ঘসময় গাড়িতে আটকে থেকে উপায় না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে ছোটেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালায় পুলিশ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সকাল থেকে রামপুরা, গুলশান, মতিঝিল, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটরসহ অনেক এলাকায় দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ জট। হঠাৎ গাড়ি চলা শুরু হলেও তার স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ ছিল না। একটি সিগন্যাল পার হতেই দীর্ঘসময় লেগেছে।

এদিকে প্রধান সড়কের এ যানজট আরো অসহনীয় হয় গলির মুখে। আশপাশের প্রধান সড়কে দিনের বেলা বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা না চললেও পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে রয়েছে তাদের আধিপত্য। যাত্রীর অপেক্ষায় গলির মুখে দাঁড়িয়ে থাকে রিকশা ও ইজিবাইক। এ জটলায় যানজট তৈরি হয় মূল সড়ক ও গলিতে। গুলিস্তান এলাকার নবাবপুর রোড, ওয়ারী কালীমন্দির রোড, নাজিরাবাজার রোড, আজিমপুর, চকবাজার রোড, সেগুনবাগিচা থেকে কাকরাইল মোড়ের গলি, হাতিরঝিল থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, গ্রীন রোড, খিলগাঁও তালতলার প্রধান সড়কের গলির মুখে রিকশা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশার ভিড়ে তীব্র যানজট হচ্ছে।

রামপুরায় যানজটে আটকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জাহিদ বলেন, ৯টায় অফিস থাকায় প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টায় বাসা থেকে বের হই। ১ ঘণ্টার মধ্যেই অফিসে পৌঁছতে পারি। রমজান শুরুর পর থেকেও সঠিক সময়ে অফিসে আসতে তেমন সমস্যা হয়নি। এতদিন যানজট সহনীয় ছিল। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে সড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেশি। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

বারিধারায় অফিস করার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী মিতু। এফডিসির সড়কে আসার পর দীর্ঘ যানজটে থমকে যায় তার গাড়ি। মিতু বলেন, ‘এমনিতেই কারওয়ানবাজারের মাছ বাজারের কারণে জ্যাম থাকে সবসময়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি ডাউন র‌্যাম্প খুলে দেওয়ায় গাড়ির স্রোত নেমেছে এ সড়কে। রিকশা তো আছেই। যার কারণে যানজট আরো প্রকট হয়েছে।’ কারওয়ানবাজার মোড় থেকে এফডিসি মোড় আসতে তার ৪০ মিনিট সময় লেগেছে বলে জানান।

মতিঝিল, রামপুরা, গুলশান ও বাংলামোটরের অবস্থাও ভয়াবহ। এসব সড়কে অন্যান্য সময় যানজট লেগে থাকে। বৃহস্পতিবার তা প্রকট আকার ধারণ করে। এসব সড়কে গাড়ি স্থবির ছিল। বেইলি রোড, হেয়ার রোড, মগবাজার এলাকায়ও সকাল থেকে যানজট তীব্র হয়েছে। অফিসার্স ক্লাব থেকে মগবাজারের দিকে যেতে যানজটের কারণে এক জায়গায় ৩০ মিনিটের বেশি থাকতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। এদেরই একজন শাকিল বলেন, গাড়ি তো চলছেই না। কতক্ষণ এ রাস্তা পার হব তার ঠিক নেই। মনে হচ্ছে গাড়ি যাওয়ার আগে হেঁটেই আগে পৌঁছতে পারব। তাই বাস থেকে নেমে রওনা হলাম।

এদিকে বুধবার চালু হওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নতুন রুটের কারণে মগবাজার, হাতিরঝিলের দিকেও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ফলে সকাল থেকে তীব্র যানজট হয়েছে এ এলাকায়। যানজটের এমন চিত্র তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারী অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমিনুল মোহায়মেন নামে একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এক্সপ্রেসওয়ের হাতিরঝিল এক্সিট দিয়ে নেমে এখন সিগন্যালে বসে আছি এ সাতসকালে।’

অবশ্য যানজট নিরসনে ট্রাফিকের প্রত্যেক সদস্যকে নিরলসভাবে কাজ করতে দেখা গেছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্যে পৌঁছায়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। তবে রমজানের আগের দিন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, সড়ক হকার ও দখলমুক্ত হবে। রমজানে ৪ ঘণ্টা বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, গুলিস্তান থেকে সদরঘাটমুখী সড়ক আর ফুটপাত দখল করে হকাররা দোকান বসিয়েছেন। বংশালের দোকানগুলোর পণ্য ওঠানামার কাজ করা হচ্ছে সড়কে। এতে যানজট আরো বাড়ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close