মাওলানা মাসউদুল কাদির

  ১৬ মার্চ, ২০২৪

সাওম পালনের শর্ত

সাওম পালনে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। আছে কিছু শর্তও। মহান আল্লাহতায়ালা মুমিনের ওপর সাওম বাধ্য করার সঙ্গে সঙ্গে কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। পাঁচ শ্রেণির মানুষের জন্য সাওম ফরজ। অবশ্য পালনীয় শর্ত হিসেবে বিবেচ্য। আল্লাহতায়ালা সমগ্র মানুষ জাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব বললেও শরিয়তের হুকুমণ্ডআহকাম পালনের ক্ষেত্রে বাধ্য করেছেন কেবল মুসলমানদের। রাষ্ট্রীয় আইন আর ইসলামের আইনের মধ্যে এখানেই পার্থক্য। শরিয়ত অন্য ধর্মের লোকদের ইসলাম পরিপালনের ক্ষেত্রে বাধ্য করে না। এ দিয়ে ইসলাম যে প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক, তা স্পষ্ট হয়। ইসলামকে একপেশে, একঘরে বা একমুখী ভাবার সুযোগ নেই। প্রকৃত ইসলাম মান্য যিনি করেন, তিনি হবেন মানবিক। অন্য সব ধর্মের মানুষের জন্যই কল্যাণকামী।

সাওম পাঁচ শ্রেণির মানুষদের ওপর ফরজ। যেমন- ক. মুসলিম হওয়া। খ. মুকাল্লাফ হওয়া, গ. সক্ষমতা, ঘ. মুকিম হওয়া ও ঙ. নারীর হায়েজ ও নেফাজ না হওয়া।

মুসলিম হওয়ার শর্ত দিয়ে যত অমুসলিম আছে, সবাই বেরিয়ে গেছে। এদের কারো ওপর ইসলাম সাওম পালনে বাধ্য করে না। শরিয়তের আমল করার জন্য প্রথমত মুসলমান হতে হবে। কালেমায়ে তাইয়েবা পাঠ করে মহান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে। তবে কেউ সহমর্মিতা দেখিয়ে সাওম পালনে তাতে ক্ষতির কিছু নেই। স্বাস্থ্যের জন্য বরং অনেক উপকার।

আরেকটি শর্ত হলো, মুকাল্লাফ হতে হবে। শরিয়তে প্রাপ্তবয়স্ক যাকে বলে, তার ওপরই সাওম ফরজ। বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে, প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে, সুস্থ ব্যক্তি হতে হবে। একজন পাগলের ওপর শরিয়তের হুকুমণ্ডআহকাম বর্তায় না।

আরেকটি শর্ত হলো, সাওম পরিপালনে অক্ষম বক্তির ওপর তা ফরজ নয়। অক্ষমতা নানাভাবে হতে পারে। বিশেষত এই অক্ষমতা যদি সাময়িক হয়, তাহলে সাওম পরে কাজা করে নিতে হবে। আর অক্ষমতা স্থায়ী হলে সাওমের জন্য ফিদয়া দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

আরেকটি শর্ত হলো, ব্যক্তিকে মুকিম হতে হবে। শরিয়ত মুসাফির অবস্থায় সাওম পালন ওয়াজিব করে না। মুসাফিরের জন্য ভিন্নরকম কিছু নিয়ম নীতিমালা আছে। ভ্রমণে যেহেতু কষ্ট হয়, পরিশ্রম হয়। ইসলাম এ কারণে ভ্রমণকারীর ওপর সাওম ফরজ করেনি। তবে এ ভ্রমণ অবশ্যই ৪৮ মাইলের দূরত্ব এবং পনের দিনের কম সময়ের জন্য হতে হবে।

আরেকটি শর্ত হলো, নারীর হায়েজ ও নেফাজ। ঋতুবর্তী ও নেফাজের সময়ের সাওম অবশ্যই কাজা করতে হবে। শুধু ওই সময় তার ওপর সাওম ওয়াজিব নয়। অন্যান্য ইবাদত যেমন সালাত আদায় করা ওয়াজিব নয়।

সাওম সম্পর্কে জেনে-বুঝে আমাদের আমল করা উচিত। না বুঝে ভুল সময়ে আমল পরিত্যাজ্য হয়। আল্লাহতায়ালা আমাদের জেনে-বুঝে আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক : প্রিন্সিপাল, মাদরাসাতু ইকরা দারুল উলুম হবিগঞ্জ

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close