নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ এপ্রিল, ২০২৩

সাংবাদিক শামসুজ্জামান কাশিমপুর কারাগারে

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এ স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এর জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কাশিমপুর কারাগারে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আমিনুল ইসলাম।

সিআইডি পরিচয়ে সাভারের বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাকে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে রমনা থানার পুলিশ। অন্যদিকে শামসুজ্জামানের পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি শুরু হয় দুপুর দুইটার দিকে। তখন হাজতখানা থেকে শামসুজ্জামানকে আদালতে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।

গত বুধবার ভোর ৪টার দিকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শামসুজ্জামানের। তুলে নেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা হয়। এ মামলার বাদী যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া। যদিও মামলার বিষয়টি জানা যায় বুধবার দুপুরের দিকে। তবে গতকাল তাকে কারাগারে পাঠানো হয় রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা নতুন আরেকটি মামলায়। এই মামলা হয় তাকে তুলে নেওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর গত বুধবার মধ্যরাতে।

রমনা থানার যে মামলায় শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, সেই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)।

২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ারের সময় ‘গ্রাফিক কার্ডে’ ছবির অমিলকে কেন্দ্র করে দেশের ভাবমূর্তি ও অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ এনে মামলা দুটি করা হয়। যদিও ফেসবুকের ওই পোস্টে অসঙ্গতি দ্রুতই নজরে পড়ে এবং তা সরিয়ে নিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মন্ত্রী ও নেতা প্রথম আলোর সমালোচনা করে আসছেন। একই সঙ্গে দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করছে। প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সম্পাদক পরিষদ, নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (নোয়াব) বিভিন্ন মানবাধিকার, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close