নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আদালতের আদেশ

বাবা-মায়ের কাছে এক দিন করে থাকবে লিনা

বাংলাদেশি ইমরান শরীফ ও জাপানি নাকানো এরিকো দম্পতির ছোট মেয়ে নাকানো লাইলা লিনা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নয়, এক দিন মায়ের কাছে ও এক দিন বাবার কাছে থাকবে। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এই আদেশ দিয়েছেন।

আদালত আদেশে বলেন, ছোট মেয়ে নাকানো লাইলা লিনা বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে। বেলা ১১টার পর সে মায়ের জিম্মায় থাকবে। বাবা ও মায়ের কাছে এক দিন পর এক দিন এভাবে থাকবে। আর বাবা ও মায়ের হেফাজত পরিবর্তন করবে গুলশান থানা-পুলিশ। আদালত গুলশান থানার ওসি কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তদারকের নির্দেশ দিয়েছেন।’

আদালত আদেশে আরো বলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুদের নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে বাবা-মাকে।

আদালত আদেশে আরো বলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক দিন বাবার জিম্মায় ও এক দিন মায়ের জিম্মায় থাকার আদেশ বলবৎ থাকবে।

শিশুর বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী নুরুল ইসলাম মিলন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর নাকানো লাইলা লিনাকে গুলশান থানা-পুলিশ আদালতে হাজির করে। এ সময় মা নাকানো এরিকোর পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম মিলন হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন। দুপুর ২টায় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি দুই শিশুর অভিভাবকত্ব দাবি করে ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে দেন ঢাকার ১২তম পারিবারিক আদালত ও দ্বিতীয় অতিরিক্ত সরকারি জজ। পরদিন দুই শিশুকে মায়ের হেফাজতে দিতে ডিক্রি দেন। পারিবারিক আদালতে ওই মামলা চলাকালীন ছোট শিশু বাবার জিম্মায় ছিল। বড় শিশু মায়ের জিম্মায় ছিল। কিন্তু পারিবারিক আদালতের রায় ও ডিক্রির পর ছোট শিশুকে নিয়ে আত্মগোপনে থাকার অভিযোগ ওঠে ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে।

শিশুটির মা এরিকো নাকানো এ বিষয়ে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর র‌্যাব বুধবার ভোরে গুলশানের কালাচাঁদপুর থেকে ইমরান ও তার ছোট মেয়েকে খুঁজে বের করে। পরে তাদের গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। গুলশান পুলিশ পরে শিশুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠায়।

এরিকো নাকানো গুলশান থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন, তাদের ছোট মেয়ে বাবা ইমরান শরীফের সঙ্গে ইমরানের গুলশানের বাসায় থাকত। তবে রবিবার এরিকো নাকানো জানতে পারেন, ইমরান এবং তাদের ছোট মেয়ে দুই সপ্তাহ ধরে ওই বাড়িতে থাকছেন না। এ বিষয়ে জানতে তিনি ইমরানকে ইমেইল করেন। কিন্তু কোনো উত্তর পাননি।

শুনানির আগে আদালত শিশু নাকানো লাইলা লিনার সঙ্গে কথা বলেন। আদালত শুনানির সময় বলেন, শিশুটি তার মার কাছে যেতে চায় না। সে বাবার কাছে থাকতে চায়। আর বড় মেয়ে আদালতকে বলেছে, সে তার মায়ের কাছে থাকতে চায়। এ প্রসঙ্গে আদালত বলেন, যেহেতু পারিবারিক আদালত মায়ের জিম্মায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ওই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। আপিলের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি। সেই কারণে ওই তারিখ ছোট শিশুকে বাবা ও মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।

এদিকে আদালতে নেওয়ার পথে বাবার সঙ্গে থাকার আকুতি জানায় লিনা। সে বলে, ‘আমি আমার বাবার কাছে থাকতে চাই। আমার বাবাকে আমি অনেক ভালোবাসি। এজন্য বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে চাই না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close