নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ নভেম্বর, ২০২২

মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

অগ্রযাত্রা কেউ রোধ করতে পারবে না

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হয়েছে তা আমরা ভুলব কীভাবে। এখন আন্দোলনের নামে মানুষের ওপর অত্যাচার করা হলে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। তিনি হুশিয়ার করে বলেন, আপনারা আন্দোলন করেন, মিটিং করেন, মিছিল করেন; কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যদি কোনো মানুষকে আগের মতো পুড়িয়ে মারা, বোমা মারা বা অত্যাচার করতে যান তাহলে ছাড়ব না।’

শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সেই অত্যাচার-নির্যাতন ভুলে যাওয়া যাবে না। এতটা জঘন্য কাজ তারা করতে পারে, যা কল্পনাও করা যায় না।

‘আমাদের বোনেরা যখন তাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গেছে তখন একদিকে বিএনপির গু-া বাহিনী অন্যদিকে জামায়াত-শিবিরের অস্ত্রধারীরা তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। আমাদের বোনদের ওরা রাস্তায় ফেলে কীভাবে মেরেছে! নির্যাতন করেছে, বুটের লাথি মেরেছে, পুলিশ স্টেশনে নিয়ে তাদের ওপর অত্যাচার করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মেয়েরা মিছিল করছে, আন্দোলন করছে, স্লোগান দিচ্ছে। তারা তাদের ইচ্ছেমতো আন্দোলন করতে পারছে। আমরা তাদের বাধা দিচ্ছি না। তাদের অত্যাচারের কথা দেশের মানুষ ভুলব না।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারপর তাদের অগ্নি-সন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা? এটাই নাকি বিএনপির আন্দোলন। এজন্য আমরা হুশিয়ার করে বলেছি- আপনারা আন্দোলন করেন, মিটিং করেন, মিছিল করেন; কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যদি কোনো মানুষকে ওইভাবে পুড়িয়ে মারেন তা হলে রেহাই পাবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর যে আঘাত করা হয়েছে তা আমরা ভুলিনি। আমরা সহ্য করেছি দেখে তারা যেন মনে না করে যে এই সহ্য করাটা আমাদের দুর্বলতা। দুর্বলতা নয়। বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। আমাদের সঙ্গে আছে। ওই খুনিদের সঙ্গে নেই।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। গৃহহীনদের ঘরসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আর বিএনপি ক্ষমতা থাকতে তেমন কিছুই করেনি। ধর্ষণসহ নারীর বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে।

এর আগে দুপুর সোয়া ২টায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। ২টা ৫০ মিনিটে সম্মেলনের মঞ্চে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জবাবে নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে অভিবাদন জানান তিনি। পরে ফুল দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়।

এর আগে গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের একটি টিউবের পূর্তকাজ সমাপ্তির উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস ও বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি।

জমকালো উদ্বোধনের আগে গতকাল শনিবার টানেলের দক্ষিণ টিউবের নির্মাণ কাজের সমাপ্তি উদযাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, এ অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, একটি গোষ্ঠী চোখ থাকতেও অন্ধ, উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না।

বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। বিদেশিদের কাছে হাত পেতে নয়, মাথা উঁচু করে বাংলাদেশ চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আর দারিদ্র্য থাকবে না। এখন আর কাউকে খাবারের জন্য হাহাকার করতে হয় না। যদিও টানেলের পুরো কাজ এখনো শেষ হয়নি। সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে আগামী ডিসেম্বর পুরো মাস লাগতে পারে। এরপর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সব কাজ শেষ করে টানেল প্রস্তুত হতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সব ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে টানেল দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close