নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মেট্রোরেলের নিরাপত্তা

অনুমোদনের অপেক্ষায় পুলিশের এমআরটি

আসছে ডিসেম্বরেই চালু হবে আরেক স্বপ্ন- দেশের প্রথম মেট্রোরেল। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সে প্রস্তুতি। এই মেট্রোরেলের নিরাপত্তা দেবে পুলিশের বিশেষ ইউনিট। মন্ত্রণালয়-দপ্তরের অনুমোদনে গঠনপ্রক্রিয়া এগিয়েছে অনেকটা। তবে, বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মতো তল্লাশি হবে মেট্রোস্টেশনগুলোতে।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, একজন উপপুলিশ মহাপরিদর্শককে (ডিআইজি) প্রধান হিসেবে রেখে ৮০৯ জনের প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো গঠন করা হয়েছে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট পুলিশ বা এমআরটি পুলিশ ইউনিটের। এর সঙ্গে কাঠামোয় আরো আছে একজন অতিরিক্ত ডিআইজি, তিনজন পুলিশ সুপার, চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তিনজন সহকারী পুলিশ সুপার, ১৪ জন পরিদর্শক, ২১ জন উপপরিদর্শক, একজন সার্জেন্ট, ৭৪ জন সহকারী উপপরিদর্শক, ২৫ জন নায়েক ও ৬৩৯ জন কনস্টেবল।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাটি প্রথমে রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) অধীনে প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে অনুসারে প্রস্তাবনাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যায়। এরপর নতুন করে তখন সিদ্ধান্ত হয় মেট্রোরেলের জন্য আলাদাভাবে ‘ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ’ ইউনিট গঠনের। পরবর্তী সময়ে পুলিশ সদর দপ্তর এমআরটি পুলিশের কাঠামো তৈরি করে ফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সংশ্লিষ্ট অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া এরই মধ্যে প্রায় সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, যাতে কোনো ধরনের রিস্ক বা কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ না থাকে এজন্য বিভিন্ন ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ছোটোখাটো বিষয়গুলোরও সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা এবং সেন্সর বসানো থাকবে অবকাঠামোর সবপর্যায়ে। যাত্রী চলাফেরা অবাধ রেখেই প্রযুক্তির সর্বাধিক সহায়তা নিয়ে কাজ করবে পুলিশ।

এম এ এন সিদ্দিক আরো বলেন, সাড়ে তিন মিনিট পর পর প্রতিটি স্টেশনে দুই থেকে আড়াইশ’ লোক উঠে আসবে একটা ট্রেনে। অপরদিক থেকেও এরকম লোক উঠবেন। এরকম স্থায়ী কোনো স্কিলিং ব্যবস্থা কোনো গণপরিবহনে নেই।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মেট্রোরেল সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত বিধায় কোনো ধরনের জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানি ব্যবহৃত হবে না। ফলে বায়ুদূষণ হওয়ার সুযোগ নেই। উড়াল মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের উভয় পাশে শব্দ প্রতিবন্ধক দেয়াল থাকবে এবং পাতাল মেট্রোরেলের টানেল সংলগ্ন মাটি শব্দ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। ফলশ্রুতিতে মেট্রোরেলে শব্দ ও কম্পন দূষণমাত্রার মানদণ্ড সীমার অনেক নিচে থাকবে। সার্বিকভাবে পরিবেশদূষণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বরং পরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সমীক্ষা অনুযায়ী রাজধানীতে মেট্রোরেল চালু হলে ২০৩০-২০৩১ অর্থবছরে মোট ২১ কোটি ৪৯ লাল ৭০ হাজার কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হবে। বছরে ৪১ দশমিক ২২ হাজার টন জ্বালানি সাশ্রয় হবে। রাস্তার গাড়ি দূরত্ব বছরে ৬৪২ হাজার কিলোমিটার হ্রাস পাবে এবং ফলশ্রুতিতে রাস্তায় গাড়ির চলাচল কমে যাবে। বায়ুতে ১৬ দশমিক ১৯ হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমে যাবে এবং অন্যান্য গ্যাসের নির্গমন ৫ দশমিক ৭৩ হাজার টন হ্রাস পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close