নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ মে, ২০২২

দ. কোরিয়াকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা ফেরাতে সহায়তা করুন

ব্যবসা সহজীকরণ, প্রকল্প বাস্তবায়ন দক্ষতা অর্জন ও মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ সহায়তা চান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সেমিনার হয়।

মোমেন বলেন, ‘সহজ ব্যবসা সূচকে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বে চতুর্থ। আর বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৮ নম্বরে। বাংলাদেশ ব্যবসা, বিনিয়োগে বিশ্বের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়া। এজন্য আমরা নিজেদের বিশ্বের অন্যতম ব্যবসাবান্ধব দেশে পরিণত করতে চাই। বন্ধুপ্রতিম দেশ দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অভিজ্ঞতা, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘৬ দশক আগেও এক কৃষিনির্ভর গরিব দেশ ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। কেবল দেশটির নেতাদের কমিটমেন্ট (অঙ্গীকার) ও প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা আজ তাদের বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আর বাংলাদেশের বড় সমস্যা হলো এই প্রকল্প বাস্তবায়ন। আমাদের এখানে বারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়; খরচ বাড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ায়ও একসময় এমন পরিস্থিতি ছিল। তাদের নেতৃত্ব দেশের উন্নয়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করে। সেখানে প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হয় না। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারলে জরিমানা করা হয়, ডিমোশন করা (পদাবনতি) হয়, অনেক সময় জেলে পর্যন্ত পাঠানো হয়। আবার দক্ষতা দেখালে প্রকল্প পরিচালক নীতিনির্ধারক পর্যায়ে পদোন্নতি পান। বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশ এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা চায়।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে জোরালোভাবে চাপ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘এর আগেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারপরও গত কয়েক বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের ভালো সম্পর্ক। কয়েক বছরে মিয়ানমারে কোরিয়ার বিনিয়োগ কয়েক গুণ বেড়েছে। রোহিঙ্গাদের যেন তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসন করা যায়, এজন্য আমি কোরিয়াকে বলব এক্সট্রা ইনিশিয়েটিভ নিতে। আপনারা মিয়ানমারকে এ ব্যাপারে চাপ দিতে পারেন। আপনারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা চাপ প্রয়োগ করুন।’

অনুষ্ঠানে ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কুয়াং বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরবর্তী বিশ্ব ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। সময় এসেছে সেটাকে কাজে লাগানোর। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার অংশগ্রহণ অনেক পুরোনো। ১৯৭৯ সাল থেকে এ খাতে কোরিয়ার বিনিয়োগ রয়েছে। অন্য খাতেও আজ কোরিয়ান বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close