প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বায়ুদূষণে বছরে মৃত্যু ৭০ লাখ

নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম পরিবেশগত হুমকি বায়ুদূষণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবে, প্রতি বছর শুধু বায়ুদূষণে বিশ্বে ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। এ সমস্যা সমাধানে বিশ্বব্যাপী বায়ুর মান উন্নত করতে এয়ার কোয়ালিটি গাইডলাইনস (একিউজিএস) আরো জোরদার করেছে সংস্থাটি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে বায়ুর মানের প্রতিটি সূচক নিম্নমুখী রয়েছে। এটি অস্বাস্থ্যকর খাবার ও ধূমপানের চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করেছে। তীব্র বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুন একিউজিএস প্রকাশ করে গত বুধবার বৈশ্বিক সংস্থাটি বলেছে, বায়ুর মানের নতুন গাইডলাইন বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে লাখো মানুষকে সুরক্ষা দেবে। একই সঙ্গে এটি সরকারগুলো বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে লড়তে মানবিষয়ক আইনগত সীমা নির্ধারণে সহায়ক হবে। স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে আনবে। লাখো মানুষের জীবন রক্ষা করবে।

সর্বশেষ ২০০৫ সালে একিউজিএস প্রকাশ করেছিল ডব্লিউএইচও। সংস্থাটি বলছে, ২০০৫ সালের পর থেকে ১৬ বছর ধরে সংগ্রহ করা তথ্য উপাত্ত এটাই বলছে যে, বায়ুদূষণ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এটা কোনো নির্দিষ্ট দেশ কিংবা অঞ্চলভেদে নয় বরং বিশ্বজুড়ে।

এ দিকে, পরিবেশ অধিদপ্তরের (ডিওই) পরিচালক (ঢাকা বিভাগ) মো. জিয়াউল হক বলেছেন, আমরা সব সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অর্জন করতে চাই। যদি মানদ- আরো কঠোর হয়ে যায় তাহলে আমাদের জন্য সেটি অর্জন করা আরো কঠিন হবে। কারণ আমরা প্রচুর পরিমাণে অবকাঠামোগত কার্যক্রম ও শিল্পায়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।

মো. জিয়াউল হক জানান, তারা বায়ুদূষণ কমানোর জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন, যেমন ধীরে ধীরে ইটের ভাটার সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং দালান নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ইটের ব্যবহার বাড়ানো।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিওইর তৈরি একটি খসড়া নীতিমালা এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী মাস থেকে এটি বাস্তবায়িত হতে পারে জানান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, দেশের নীতিমালাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। বাংলাদেশিদের ফুসফুস মার্কিনদের ফুসফুস থেকে ভিন্ন নয়। আমি সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার কারণে নিজের আয়ু কমাতে রাজি নই। বিষয়টির গুরুত্ব অনুযায়ী নীতিমালার পরিবর্তে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে আইন তৈরি করা উচিত।

নীতিমালা প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, বায়ুদূষণ সব দেশের জন্য একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি, কিন্তু এটি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো সবচেয়ে কঠিনভাবে আঘাত করে। বাতাসের মানের নতুন নীতিমালা একটি তথ্য-প্রমাণভিত্তিক ব্যবহারিক উপকরণ, যার মাধ্যমে বায়ুর গুণগত মানের উন্নয়ন করা যাবে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এবং জীবন রক্ষা করতে সব দেশ ও পরিবেশ আন্দোলনকারীদের নতুন নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।

নতুন নীতিমালা সুপারিশ করেছে বার্ষিক গড় পিএম ২.৫ এর ঘনত্বকে প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম (২০০৫ এর মানদণ্ড) থেকে কমিয়ে ৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনতে। পিএম ১০ এর ক্ষেত্রে সুপারিশ হচ্ছে ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ২০ মাইক্রোগ্রাম থেকে কমিয়ে ১৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close