হাসান ইমন

  ০৭ মে, ২০২১

স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা

কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপ করা বিধিনিষেধের কারণে তিন সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে চালু হয়েছে গণপরিবহন। তবে প্রথম দিনেই স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অবহেলা লক্ষ করা গেছে। সামাজিক দূরত্ব রজায় না রেখে দাঁড় করিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। ঠিকভাবে মুখে মাস্ক পরেননি বাসের যাত্রী, চালক ও সহকারীরা। বেশির ভাগ বাসে ছিল না জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যবস্থা। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, মগবাজার, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অছিম, রবরব ও তরঙ্গসহ বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাসে দাঁড়িয়েও চলাচল করেন অনেক যাত্রী। তবে বেশির ভাগ বাসে প্রতি দুই আসনে একজন করে যাত্রী ছিল। আর পরিবার নিয়ে বের হওয়া সদস্যরা পাশাপাশি সিটে বসে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অছিম পরিবহনের বাসের চালক ইসরাফিল বলেন, ‘যারা একই পরিবারের সদস্য তারা দুই সিটে পাশাপাশি বসেছেন।’ জীবাণুনাশক না রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালিকরা কোনো জীবাণুনাশক স্প্রে আমাদের দেয়নি।’

বিহঙ্গ পরিবহনের এক বাসের কন্ডাক্টর মো. জসিম থুতনির নিচে রেখেছিলেন মাস্ক। কেন মাস্ক ঠিকভাবে পরেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতক্ষণ মাস্ক পরেছিলাম। এইমাত্র একটু নাক থেকে নামিয়েছি। শ্বাস নিতে একটু সমস্যা হচ্ছিল তাই।’

জসিম আরো বলেন, ‘সকালে বাস রাস্তায় নিয়ে নামার আগে পুরো বাসের সিটে জীবাণুনাশক স্প্রে করেছি। পাশাপাশি দুই সিটের একটিতে যাত্রী নিয়ে অন্যটি ফাঁকা রেখে বাস চালানো হচ্ছে। কেউ দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন না। যাত্রীদের মাস্ক না থাকলে বাসে যাতায়াত করতে দিচ্ছি না।’

তুরাগ পরিবহনের এক বাসের চালক মোবারকও ঠিকভাবে মাস্ক পরেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ মাস্ক পরেছিলাম। একটু আগে নামিয়েছি। এখন পান খাচ্ছি বলে মাস্ক নাক থেকে নামিয়ে রেখেছি।’ এদিকে, অনেক দিন পর বাস চালু হওয়ায় খুশি সাধারণ মানুষ। তবে অনেকেই সময়মতো বাসে উঠতে পারেননি, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের।

মহাখালীগামী একটি বাসের যাত্রী কাওসার আহমেদ বলেন, ‘অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাস পেয়েছি। অফিস খোলা, এত দিন সিএনজি অটোরিকশায় অফিসে যেতাম। আজ গণপরিবহন চালু হওয়ায় অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের সবার সচেতন থাকা প্রয়োজন।’

মতিঝিলগামী বাসযাত্রী সোহাগ বলেন, ‘বাস চালু হওয়ায় চালক-কন্ডাক্টর ইচ্ছামতো যাত্রী পরিবহন করবে। তবে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি যথাযথভাবে মনিটরিং করা হলে আমরা এর সুফল পাব।’ এদিকে, বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহকে মোবাইল ফোনে বারবার কল দিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কোভিড সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৩১ মার্চ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে শুরু হয় গণপরিবহন চলাচল। এরপর বিধিনিষেধের কারণে গত ৫ ও ৬ এপ্রিল বন্ধ থাকে গণপরিবহন। অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধ রাখার সমালোচনার মুখে ৭ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। তবে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ছিল গণপরিবহন চলাচল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close