নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২০

নির্বাচনী প্রচারে মেয়র প্রার্থীরা / আতিকের ইশতেহার ঘোষণা

সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ে তুলতে তিনি ৩৮টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মেয়র পদে নির্বাচিত হলে এসব ওয়াদা বাস্তবায়ন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন আতিকুল ইসলাম। সুস্থ, সচল ও আধুনিকÑ এই তিন শিরোনামে নিজের ইশতেহার সাজিয়েছেন তিনি।

ইশতেহারে ৩৮টি প্রতিশ্রুতিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে, সুস্থ ঢাকা গড়ে তুলতে ১৩টি ওয়াদা করেছেন তিনি। এগুলো হলোÑ

১. উন্নতবিশ্বের মতো ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতিতে বছরব্যাপী মশা নিধন।

২. টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটি স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্যকে জ্বালানি ও শক্তিতে পরিণত করা।

৩. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে শহরের সব ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব আয়োজন করা।

৪. বস্তিবাসীর জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।

৫. প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া।

৬. ডিএনসিসির বর্ধিত এলাকায় কম্প্রিহেনসিভ রি-প্রোডাক্টিভ হেলথ কেয়ার সেন্টার ও প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নির্মাণ।

৭. মিরপুরে বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ।

৮. সবার জন্য উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ।

৯. বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক পশু জবাই কেন্দ্র স্থাপন।

১০. ডিএনসিসির প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ।

১১. বিশেষভাবে সক্ষম ও সবার জন্য আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ।

১২. মিস্ট ব্লোয়ার ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমানো।

১৩. ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে আধুনিক ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি।

সচল ঢাকা শিরোনামেও আছে ১৩টি ওয়াদা। এগুলো হলোÑ

১. ফুটপাত দখলমুক্ত করে ফুটপাত নেটওয়ার্ক তৈরি করা।

২. যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।

৩. পথচারী পারাপারে বিভিন্ন জেব্রাক্রসিংয়ে ডিজিটাল পুশ বাটন স্থাপন।

৪. নগর পরিবহনে ই-টিকিটিং সেবা।

৫. শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা।

৬. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা ও গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ।

৭. নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ।

৮. হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

৯. আনিসুল হকের পরিকল্পনা ঢাকা বাস রুট র‌্যাশনাইলেজেশরের কাজ সম্পন্ন করা।

১০. এসকেলেটরসহ ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ।

১১. সাইকেলের জন্য আলাদা লেন ও সাইকেল পার্কিং।

১২. স্মার্ট বাসস্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ।

১৩. প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করা।

আধুনিক ঢাকা শিরোনামে ১২টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আতিকুল ইসলাম। এগুলো হলোÑ

১. সবার ঢাকা অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকি করা। মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ নিশ্চিত করা।

২. ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্য নাগরিক সেবা দেওয়া।

৩. ডিএনসিসির মালিকানাধীন কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য স্ট্রাকচারাল আপগ্রেডেশন।

৪. একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি, যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হবে।

৫. নগর পরিকল্পনাবিদ রাষ্ট্রপতিসহ অন্য বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ।

৬. সব লেট খালের সংস্কার উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধকের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন।

৭. বায়ুদূষণ রোধে ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু করা।

৮. ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তৈরি হবে হেল্পডেস্ক।

৯. উত্তর ঢাকাকে একটি স্মার্ট সিটি করে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকায় স্মার্ট নেইবার হুড হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

১০. তরুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবা কেন্দ্র গঠন।

১১. প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোর আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।

১২. জাবেদা নিষিদ্ধ করতে জনতার মুখোমুখি মেয়র শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান।

এ সময় আতিক বলেন, নগরীর সার্বিক উন্নয়নে আমি কথা দিচ্ছি, আমাকে আবার পূর্ণ মেয়াদে নির্বাচিত কবলে লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। সব উন্নয়ন অগ্রগতির সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে ঢাকা শহরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সমস্যার সমাধান করে গড়ব সবার প্রিয় ঢাকা, যে ঢাকা আপনাদের সবার প্রাপ্য।

এর আগে আতিকের পক্ষে ভোট চেয়ে মেয়ে বুশরা আফরিন বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে মেশার অসম্ভব ক্ষমতা আছে আমার বাবার। কোনো কাজই তার কাছে অসম্ভব না। দেখা যায় তিনি কখনো লুঙ্গি-গেঞ্জি পরে গান গেয়ে পোষা প্রাণীর সঙ্গে খেলা করেন, আবার কখনো বাচ্চাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেন। বাবা আসলে এমনই। তিনি এসব কাজে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তিনি সৎ, পরিশ্রমী, মেধাবী এবং ব্যক্তিত্ববান।’

আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা, তার পরিবারের সদস্যরা। ছিলেন সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতের অনেকেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close