আদালত প্রতিবেদক

  ১৪ অক্টোবর, ২০১৯

আবরার হত্যা

মোয়াজ, শামীম রিমান্ডে, মুজাহিদের দোষ স্বীকার

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওয়াহিদুজ্জামান আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন বলে দুই পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, ফাহাদ হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা বুয়েটছাত্র মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্র্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুজাহিদ বুয়েট ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। গতকাল মুজাহিদকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এ আদালতের পেশকার জাহিদ হাসান বলেন, মুজাহিদ অপরাধে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে বুয়েটছাত্র ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন ও অনিক সরকার আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালতে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শামীমের পক্ষে আইনজীবী ফকির আব্দুল মজিদ ও মোয়াজের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল হোসেন জামিনের আবেদনে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) জামিন বাতিল করে রিমান্ড চান।

শামীমের আইনজীবী বলেন, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। দুর্ভাগ্যক্রমে তাকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাশের রুম থেকে আসার পথে দ্বিতীয় ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। এ মামলায় ঘটনাস্থল থেকে যারা গ্রেফতার হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে শামীমের বিরুদ্ধে তারা কিছু বলেননি। মামলাটির তদন্ত চলছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হয়ে আসুক। এ অবস্থায় শামীমের রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

আইনজীবী কামরুল শুনানিতে বলেন, মোয়াজকে হলের করিডরে আসা-যাওয়ার পথে দেখা গেছে। যে আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা কেউ তার নাম বলেননি। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

আসামিপক্ষের আইনজীবীদের প্রতি উত্তরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, রাত আড়াইটার সময় আসামিরা আসা-যাওয়া করছিল। তাদের এত পড়াশোনা! আসলে তারা সেখানে পাহারা দিচ্ছিল।

উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কিছু বলার আছে কি নাÑ জানতে চাইলেও আসামিরা কোনো কথা বলেননি। এরপর আদালত আসামিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

সাতক্ষীরা হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় শুক্রবার বিকালে শামীম বিল্লাহকে এবং শনিবার বেলা ১১টায় মোয়াজকে উত্তরা ১৪ নম্বরের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকান্ডে জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে। আর আবরারের বাবা যে ১৯ জনের নামে মামলা করেছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

আবরার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত কয়েক দিনে মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে এ মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close