তুহিন আহমদ, সিলেট থেকে

  ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

সিলেটের মাঠে ওয়ানডে অভিষেক

টাইগারদের সিরিজ জয়

সিলেটের মাঠে বাংলাদেশের আগের দুই ম্যাচের ব্যর্থতা ঘুচিয়ে ওয়ানডে অভিষেক জয় দিয়ে রাঙালো টাইগাররা। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। আর এর মধ্য দিয়ে সিলেটের মাঠে প্রথম কোনো দল ট্রফি জিতল।

গতকাল শুক্রবার সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইন্ডিজদের ছুড়ে দেওয়া ১৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকারের দারুণ ইনিংসে স্বাগতিকরা ৩৮.৩ অভারেই লুফে নেয় জয় ও সিরিজ। আগের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও জিতেছিল বাংলাদেশ। শেষ ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করা মেহেদী হাসান মিরাজ আর সিরিজ সেরা হন ক্যারিবিয়ান তারকা দুটি সেঞ্চুরি করা শাই হোপ।

সৌম্য সরকারকে উপরে খেলানোর কথা বলেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলা কথা কাজে লাগিয়েছেন অধিনায়ক। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে নিজের ইচ্ছাকে পোষণ করে দুই ম্যাচ পর সৌম্য সরকারকে আবারও তিন নম্বরে। ফলাফল এসেছে হাতেনাতে। ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন এই বাঁ-হাতি। ৬২ বলে অর্ধশতক হাঁকানো সৌম্য সরকার ভয়ংকর হয়ে উঠেন। ৩ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারিতে সৌম্য অর্ধশতক হাঁকান। পরে তার ব্যাট থেকে আসে আরো ২ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারি। ৮১ বলে ৮০ রানের ইনিংসে সমান ৫টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি।

তামিম ইকবালের সঙ্গে গড়েছেন ১৩১ রানের জুটি। জয়ের জন্য রানের সংখ্যা দুই অর্ধশতকের পর অনেকটা নিচে নেমে এসেছিল। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সৌম্যকে উৎসাহ জাগিয়ে যান তামিম। যদিও কিমো পলের বলে লেগ স্টাম্প উপড়েপড়ায় ম্যাজিক ফিগারের পথে হাঁটা হয়নি।

১৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তামিম ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে বাংলাদেশের জয় ৮ উইকেট ও ৬৯ বল হাতে রেখে। সিরিজে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস। এ ছাড়া ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে লিটনের ব্যাট থেকে আসে ২৩ এবং মিডল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ১৬ রান সংগ্রহ করেন। তাদের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২-১ এ সিরিজ স্বাগতিকদের।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেকে সিরিজে প্রথমবার টস জিতেন মাশরাফি। সন্ধ্যায় ঘন কুয়াশার কথা চিন্তা করেই কিনা ফিল্ডিং নিতে দ্বিতীয়বার ভাবলেন না অধিনায়ক। ফিল্ডিং করতে নেমে মিরাজের হাত দিয়ে প্রথম সাফল্যে বাংলাদেশের।

মাত্র চতুর্থ ওভারে হেমরাজকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেটের পর দ্বিতীয় উইকেটও তুলে নেন মিরাজ। এবার ড্যারেন ব্রাভোকে সরাসরি বোল্ড করেন এই অফ স্পিনার।

দুই উইকেট পতনের পর উইকেট সেট হচ্ছিলেন শাই হোপ এবং মারলন স্যামুয়েলস। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে জয় এনে দেওয়া হোপ তুলে নিয়েছেন চতুর্থ ওয়ানডে শতক। তবে স্যামুয়েলস থাকতে পারেননি উইকেটে। সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় ওভারে ইন সুইংয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথে হাঁটেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞ স্যামুয়েলস। শুধু স্যামুয়েলস নন শাই হোপ ছাড়া উইন্ডিজের হয়ে স্যামুয়েলসের ১৯ রানকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান।

স্যামুয়েলসের পর উইকেটে আসা হেটমায়ারকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। এলবির ফাঁদে পড়ে মাঠের বাইরে চলে যান এই মিডল অর্ডার। দুই দলের সিরিজে এই নিয়ে একাধিকবার হেটমায়ারকে আউট করলেন মিরাজ। ম্যাচে মিরাজের শিকার ৪ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। আগের সর্বোচ্চ গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেট।

সাকিব আল হাসানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকিয়ে চলতি সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন শাই হোপ। টেস্ট সিরিজে মিরপুরে ৯৩ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান টেস্ট সেঞ্চুরির আক্ষেপ মিটিয়েছেন ওয়ানডেতে। ১২০ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ১ ওভার বাউন্ডারিতে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন।

হোপের সেঞ্চুরির পর অলিখিত ফাইনালে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখে সফরকারীরা। নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে উইন্ডিজ ক্রিকেট দল। যেখানে ১৩১ বলে ১০৮ রানের অপরাজিত ইনিংস শাই হোপের। ওভার প্রতি মাত্র ৪ রানের সমীকরণে জয় পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close