ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৩ জুলাই, ২০১৮

ইতিহাস গড়তে প্রস্তুত ক্রোয়েশিয়া

ইংল্যান্ড যখন ১৯৯০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল তখন জন্মই হয়নি ক্রোয়েশিয়ার। এর এক বছর পরই যুগোস্লাভিয়ার পতনের মধ্য দিয়ে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে উদ্ভব ঘটে দেশটির। তার ঠিক ৭ বছর পর বিশ্বকে চমক লাগিয়ে দিল ক্রোয়াটরা। প্রথমবারের মতো ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে এসেই ডেভর সুকার, বোবানদের হাত ধরে সেমিফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া। সেই অভিযানে তারা হারিয়ে দিয়েছিল জার্মানির মতো পরাশক্তিদের। কিন্তু শেষ চারের লড়াইয়ে স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে ঘরে ফিরতে হয় তাদের। সেই থেকে বোধহয় স্বপ্নের বীজটা রোপণ করে গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। সুকার এখন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি। এবার তার সেই অতীত আক্ষেপটা ঘুচিয়ে দিলেন লুকা মডরিচ-ইভান রাকিটিচরা। পরশু লুঝনিকির সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের স্বপ্নের ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া।

ইংলিশদের বিপক্ষে হৃদয়ভাঙা জয়, তার মধ্যে প্রথমবার ফাইনাল, পরশু আনন্দের বন্যা বইয়ে গেছে ক্রোয়েশিয়ায়। লাখ লাখ মানুষ জয় উদ্যাপন করতে মিলিত হয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে। পিছিয়ে পড়ার পরও এমন জয়ে বাঁধভাঙা উল্লাস থাকায় স্বাভাবিক। সেই আনন্দ ছুঁয়ে গেছে কোচ জøাতকো দালিচকেও। তার অধীনেই তো ক্রোয়েশিয়া নতুন ইতিহাস লিখল। ম্যাচপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাটি জানালেন ৫১ বছর বয়সী কোচ। ‘ক্রোয়েশিয়া জাতি এবং ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রের জন্য একটি নতুন ইতিহাস লেখা হলো।’

বিশ্বকাপের আগে এমন ইতিহাসটাই লিখতে চেয়েছিলেন মডরিচ, রাকিটিচ, মান্দজুকিচরা। না হয় দেখুন না, গ্রুপ পর্বে টানা তিন জয়, শেষ তিন নকআউট পর্বে ৩ বার পিছিয়ে পড়েও জয় তুলে নেওয়া। মানসিক শক্তি না থাকলে কি এত অবিস্মরণীয় কিছু করা সম্ভব! তার মধ্যে নিজেদের শেষ ৩ ম্যাচে খেলতে হয়েছে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট করে। কিন্তু একটুও ক্লান্তিতে নুইয়ে যায়নি ক্রোয়াটরা। অবশেষে থ্রি-লায়নসদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়ে নিজেদেরই নতুন সিংহ হিসেবে ঘোষণা করলেন জয়ের নায়ক মান্দজুকিচ। ‘আজ (বুধবার) রাতে আমরা মাঠে সিংহের মতো ছিলাম এবং ফাইনালেও আমারা এমনই থাকব। আমরা ম্যাচটা উপভোগ করেছিলাম।’

১৫ জুলাই লুঝনিকির ফাইনালে যদি এমন সিংহের মতোই লড়াই করেন তবে কপালে খারাপ আছে ফ্রান্সের। কারণ ২০ বছর আগের প্রতিশোধটাও যে সুদে-আসলে তুলতে প্রস্তুত থাকবে ক্রোয়েশিয়া। ফাইনালের আগে ফরাসিদের একটি পরোক্ষ হুমকি বার্তাও জানিয়ে দিলেন ক্রোয়াট কোচ দালিচ। ইংলিশদের বিপক্ষের ম্যাচটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলার পাশাপাশি তিনি ফাইনালের প্রতিপক্ষ নিয়ে বলেন, ‘হতে পারে বুধবারের ম্যাচটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য আছে। হতে পারে সৃষ্টিকর্তা আমাদের একটি হিসাব চুকানোর সুযোগ দিয়েছেন। আমরা ফাইনালে উঠলাম। ফ্রান্স নিজেদের সামলে ওঠার জন্য একটি দিন বেশি পেল। কিন্তু এটা আমাদের জন্য কোনো অজুহাত হবে না। এখনো একটা ম্যাচ বাকি আছে। সৃষ্টিকর্তা চান তো আমরা চ্যাম্পিয়ন হব।’

২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের পর এবার একটি নতুন দলকে দেখা যাবে ফাইনালে। আর লুঝনিকির ফাইনালে যদি দালিচের শিষ্যরা জয় পায় তবে চ্যাম্পিয়নদের তালিকায় যুক্ত হবে ক্রোয়েশিয়ার নাম। সুগম না হলেও নিজেদের ৫ম বিশ্বকাপেই ফাইনাল উঠা দলটি নিশ্চয় নতুন ইতিহাস সৃষ্টির জন্য মুখিয়ে থাকবে। সেই কথাটা জানিয়েও দিলেন কোচ দালিচ। ‘যাদের মান আছে তারাই বিশ্বকাপ জিতবে। মাঝখানে একদিন আমরা বিশ্রাম নেব। তারপর ফ্রান্সের জন্য প্রস্তুত হব।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist