নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ মে, ২০১৮

আমদানি বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী

আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিপরীতে রফতানি আয় কাক্সিক্ষত হারে বাড়ছে না। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ডলারের মূল্যের ওপর। তাই মাস দুয়েক আগেও যেখানে প্রতি ডলার পেতে ৭৯ টাকা ব্যয় করতে হতো, এখন তা বেড়ে প্রায় ৮৫ টাকায় উঠে গেছে। এতে চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এ অবস্থায় ডলার সংকট মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। অন্যদিকে ডলারের ঊর্ধ্বমুখিতা ঠেকাতে প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দাম কমছে না।

গতকাল বিভিন্ন ব্যাংকের ডলারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে যেখানে ৮৩ দশমিক ৭০ টাকা ব্যয় করতে হয়, সেখানে পণ্য আমদানির জন্য গ্রাহকদের প্রতি ডলারে ৮৪ দশমিক ৯০ টাকা অর্থাৎ প্রায় ৮৫ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। তবে খোলাবাজারে এই গুলোকেও ছাপিয়ে ওইদিন প্রতি ডলারে ৮৫ দশমিক ৩০ টাকা থেকে ৮৫ দশমিক ৫০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়েছে প্রতি ডলারের জন্য।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডলারের বাড়তি চাহিদা কমানো না গেলে এবং কাক্সিক্ষত হারে যদি রফতানি আয় না বাড়ে, তাহলে সামনে ডলারের সংকট আরো বেড়ে যাবে। তখন বাজার আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। এতে আমদানি ব্যয় বাড়বে, বাড়বে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়। ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ব্যালান্স অব পেমেন্টের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৭-১৮

অর্থবছরের ৯ মাসেই (জুলাই-মার্চ) পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। এই অঙ্ক গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ের প্রায় দ্বিগুণ। আর পুরো অর্থবছরের (জুলাই-জুন) ঘাটতির চেয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭০৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর অর্থবছর শেষ হয়েছিল ১ হাজার ১৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের ঘাটতি নিয়ে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৪ হাজার ৩০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে রফতানি থেকে আয় হয়েছে ২ হাজার ৭০৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই হিসাবে ২৫৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজের মতো বড় বড় মেগা প্রকল্পর কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আর এসব বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি বেড়ে গেছে। পাশাপাশি শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে। এসব কারণেই বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। এই ঘাটতি মেটানো হয় রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগ দিয়ে। এই খাতেও কিছুটা নিম্নগতি রয়েছে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট বা বিওপি) ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ছেড়েছে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist