নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতা নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়
বাঙালির এখন পর্যন্ত যত অর্জন সব কিছুতেই ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রলীগকে তার ঐতিহ্য মেনে সততার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়, বরং মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য। মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেই নেতা হতে হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দুই দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা। ২৯তম এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবে ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্ব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ১৬টি দেশকে পেছনে ফেলে উন্নত দেশের কাতারে যাচ্ছি। আমি দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আর অন্যরা দেশের মানুষের ভাগ্যবিড়ম্বনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারে এলেই দেশের উন্নতি হয়, সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়। আমরা চাই, দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আদর্শের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি জানান, আদর্শহীন রাজনীতি রাজনীতি নয়, এই রাজনীতি করে মানুষকে কিছু দেওয়া যায় না। এসময় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই ছাত্রলীগের আগামী দিনের নেতৃত্ব আসুক সমঝোতার মাধ্যমে। কারণ যোগ্যরাই বরাবর বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। আগামী দিনেও সেটিই হবে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সব ছাত্রছাত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ; এমনকি এখন পর্যন্ত যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে সেখানেই ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে। ছাত্রলীগ ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই ঐতিহ্য বজায় রেখে জাতির পিতার গড়া সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যকে মানুষের কল্যাণ নিয়ে ভাবতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকাশক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। কেউ ধরা পড়লে থাকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলে দিয়েছি এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।’
সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা বক্তব্য দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ফার্স্ট টাইম তরুণ ভোটাররা হবে আওয়ামী লীগের বিজয়ের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। সেই ফার্স্ট টাইম ভোটারদের সংঘটিত করার কাজ পড়বে ছাত্রলীগের ওপর। এই দায়িত্ব তোমাদের পালন করতে হবে।’
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে গেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ পাশে ছিল। মাদক ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করার জন্য কাজ করেছি। পাশাপাশি ছাত্রলীগের কর্মীদের সচেতন করার জন্য চেষ্টা করেছি।’
সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন নিজের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর শোকের মাস আসে। আমরা সেই শোক দিবস সঠিকভাবে পালন করি। ৯ মাসের মধ্যে ১০৯টি শাখার কমিটি গঠন করি। প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলায় কমিটি করেছি। নতুন করে ৭০২টি পৌরসভার কমিটি দিই।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর আমরা কাজ করতে চেয়েছি। জানি না আমরা কতটুকু সফল হয়েছি। আমরা ছাত্রলীগকে গ্রামগঞ্জে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা যে কাজ করেছি তার সব কর্তৃত্ব আপনাদের (ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের)।’
"