নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ জানুয়ারি, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীকে ডিএমপি কমিশনার

পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো ভারসাম্যহীন

পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো ভারসাম্যহীন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় জননিরাপত্তায় তার প্রভাব পড়ছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানালেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার সরকার প্রধানের সামনে বলেন, পুলিশের

সাংগঠনিক কাঠামোটি ভারসাম্যহীন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, নিবিড় তদারকিসহ সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে জননিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে।

একই পদে এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে তার কাজেও সেটার যে প্রভাব পড়ে, প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে তাও বলেছেন অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার এই পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রশাসনের অন্য ক্যাডার সার্ভিসের তুলনায় পুলিশে গ্রেড ওয়ান ও টু কর্মকর্তা তুলনামূলক অনেক কম থাকার কথাও বলেন তিনি। সরকারের বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে এক দশমিক ১৭ থেকে চার দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রেড ওয়ানসহ পাঁচ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ গ্রেড টু পদ রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশ পুলিশ এদিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। পুলিশ বাহিনীতে ক্যাডার পদ রয়েছে দুই হাজার ২৮৯টি। যার মধ্যে, মাত্র দুটি গ্রেড ওয়ান এবং ১৩টি গ্রেড টু পদ রয়েছে। ২০১৭ সালের পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও গ্রেড ওয়ান পদ সৃজন না হওয়ার অনুযোগও জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।

আপনার নির্দেশিত পাঁচটি গ্রেড ওয়ান পদের বিপরীতে দুটি পদ সৃষ্টি হলেও বাকি তিনটি পদ এখনো সৃষ্টি হয়নি। গত পুলিশ সপ্তাহে আপনি এখানে বসেই সুষ্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাকি তিনটি পদ সৃজনের জন্য। এখনো তা হয়নি। পদ না থাকায় ২৫ বছরের বেশি সময়ে ধরে অনেক ‘যোগ্য কর্মকর্তা’ এক পদে আটকে আছেন বলেও জানান আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু শূন্য পদ না থাকার কারণে ২৭ থেকে ৩০ বছর দক্ষতার সঙ্গে পেশাদারিত্ব দায়িত্ব পালন করার পরও শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেড থ্রি অর্থাৎ ডিআইজি ও গ্রেড ফোর অর্থাৎ এডিশনাল পদে আটকে আছে। এরমধ্যে, অনেকে আছেন; আমিসহ যারা একেবারে অবসরের দ্বারপ্রান্তে, শুধু পদ না থাকার জন্য আমরা এডিশনাল আইজি পদ পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, আপনার সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেই ২০১৩ সালের হেফাজতি তা-ব, ১৪ ও ১৫ সালের নজিরবিহীন বোমা সন্ত্রাস এবং ১৬ ও ১৭ সালে জীবনবাজি রেখে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোরভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।

অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি মুনীরুজ্জামান সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ছোট হলেও পুলিশের একটি এভিয়েশন উইং গঠনের প্রয়োজন। জঙ্গিবাদের জড়িতদের ৮২ শতাংশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পৃক্ত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আলী হোসেন কোর্ট পুলিশের সুবিধা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কোর্ট পুলিশের সদস্যরা সত্যিকার বলতে এখনো অবহেলিত। কোর্ট পুলিশের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। রাজবাড়ী পুলিশ সুপার সালমা বেগম বাহিনীতে প্রশিক্ষণের সুবিধা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।

পুলিশ সদস্যদের বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, দাবি করার প্রয়োজন হবে না। আমরা উপলব্ধি করতে পারি কী কী করতে হবে। প্রশিক্ষণ ও লোকবল যদি না বাড়াই, তাহলে পুলিশ সেবাটা দেকে কিভাবে?

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist