reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ আগস্ট, ২০২০

সিনহা হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে

সিনহা হত্যাকান্ডে বিচারে সরকার শুভ উদ্যোগ নিয়েছে। সবস্তরের সাধারণ মানুষ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, বিচার যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এবং সুষ্ঠু বিচারের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহাছড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ বাকি চারজনকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কক্সবাজার জেলা জজ আদালত। এর আগে সাত আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন একই আদালত। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সাত আসামির আত্মসমর্পণের পর বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন এই আদেশ দেন।

এদিকে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। গত বুধবার কক্সবাজার সেনাবাহিনীর বাংলো জলতরঙ্গে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন। এ সময় সিনহার মৃত্যুর ঘটনায় দুই বাহিনীর সম্পর্কে চিড় ধরবে না বলেও জোর দেন তারা। জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। যে ঘটনা ঘটেছে তাতে অবশ্যই সেনা ও পুলিশ বাহিনী মর্মাহত। এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি যে মেসেজ দিয়েছেন তা হলো তার ভাষায় এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তিনি আরো জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি ‘জয়েন্ট ইনকোয়ারি টিম’ গঠন করা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসও দিয়েছেন।

সেনাপ্রধানের কথার ওপর সেনা ও পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে। যে যৌথ তদন্ত দল গঠিত হয়েছে, তার ওপরও দুটি বাহিনীই আস্থাশীল। এ ছাড়াও দেশের সাধারণ মানুষও আস্থা রাখতে আগ্রহী। পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে আইনের শাসন আছে। সংবাদমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে। বিচার বিভাগ মুক্ত। এ ঘটনা নিয়ে কিছু উসকানিমূলক কথা শোনা যাচ্ছে। যারা উসকানি দিয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক। সিনহার মৃত্যুতে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হবে না। কমিটি প্রভাবমুক্ত পরিবেশে তদন্ত করবে। কমিটি যে সুপারিশ দেবে, সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে গত ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনার বিচার চেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আদালতের বিচারক মামলাটি নথিভুক্ত করে সাত দিনের মধ্যে আদালতকে অভিহিত করতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত করে আদালতকে জানানোর জন্য র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তী পর্যায়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তের মধ্যে তিনজনকে সরাসরি রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং বাকি চারজনকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ আদালতের। আমরা মনে করি, আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। কোনো পর্যায়ে গতিরুদ্ধ হবে না এবং আমরা একটি সুষ্ঠু তদন্তের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার পাব- এটুকুই দেশবাসীর প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close