reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ঋণখেলাপি বাড়ার আশঙ্কা দূর করতে হবে

এমনিতেই ঋণখেলাপিদের চাপে দেশের অর্থনীতি অনেকটা চাপের মধ্যে রয়েছে। খেলাপিরা তাদের ঋণ ঠিকমতো পরিশোধ করছেন না। আবার ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সময় অনেকেই নিয়মনীতি না মেনে ঋণ গ্রহণ করায় পরিশোধের কোনো তোয়াক্কা করছেন না। কেননা তারা যে খাতে ঋণ গ্রহণ করেছিলেন সেই খাতে তা ব্যবহার করেননি। টাকা অন্য খাতে সরিয়েছেন। এসব পুরোনো দিনের গল্প। যুক্ত হয়েছে নতুন উপসর্গ করোনাভাইরাস। এই ভাইরাস আমাদের অর্থনীতিকে কিছুটা হলেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চীনের সঙ্গে মাসখানেক ধরে পণ্য সরবরাহে (সাপ্লাই চেইন) বিঘœ ঘটছে। সময়মতো চীন থেকে পণ্য জাহাজীকরণ না হওয়ায় ঋণের বাড়তি সুদ ও দ-সুদ দিতে হবে। এতে ব্যাংকিং খাতে পেমেন্ট ওভারডিউ (যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারা) হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ঋণখেলাপির সংখা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কাও করছেন তারা। তিনি আরো বলেন, এ অবস্থায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য ঋণ সহায়তা ও ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।

এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে সরবরাহ করলে তাদের অ্যাকাউন্ট যাতে ক্ল্যাসিফাইড (খেলাপি) না হয় এবং অতিরিক্ত চার্জ, দ-সুদ না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। যেসব ঋণপত্র খোলা আছে, শিপমেন্ট হচ্ছে না এবং শিপমেন্টে সময় লাগছেÑ সেসব ক্ষেত্রে অন্য কোনো সোর্স থেকে আমদানির সুযোগ থেকে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠানকে এলসি লিমিটের বাইরে স্বল্পমেয়াদি ঋণ সুবিধা দেওয়াটাও দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখার জন্য জরুরি। আর ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় সরবরাহ চেইনের নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাশনাল সাপ্লাই চেইন স্ট্র্যাটেজি করারও প্রস্তাব রেখেছেন তারা। তাদের এ বক্তব্য এবং প্রস্তাবনাকে যৌক্তিক বলে ধরে নেওয়ার পরে আমাদের মাঝেও একটি শঙ্কা থেকেই যায়। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। আমরাও সেই ঘর পোড়াদের দলে। আমাদের দেশে খেলাপি ঋণের যে ইতিহাস, সেদিকে তাকালেই ঘর পোড়া গরুদের সিঁদুরে মেঘের কথাই মনে করিয়ে দেয়। আমরা মনে করি, সংকট মোকাবিলায় সুবিধা আপনারা পেতেই পারেন। তবে সে সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অতীতের মতো কাজির খাতায় হিসাব ঠিক থাকলেও গোয়াল যেন গরুশূন্য না হয়ে যায়। অর্থাৎ কোনো ধরনের করোনাভাইরাস যেন এখানে ঢুকে না পড়ে।

করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে এ কথা যেমন সত্য একইভাবে এই বিপর্যয় মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদ- সোজা রাখার দায়িত্ব আমাদের। তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক ম্যানেজমেন্টকে অতীতের সবকিছু ভুলে গিয়ে সততার কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। নতুন পথের সন্ধান করতে হবে। কাজটার বিষয়ে বলাটা যত সহজ, করাটা তার চেয়ে শত-সহ¯্রগুণ কঠিন। কঠিন হলেও আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নে সফলতা পাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা এই সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সোজা হয়েই দাঁড়িয়ে থাকবেÑ এটাই ১৭ কোটি মানুষের বিশ্বাস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close