আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৯ অক্টোবর, ২০১৮

মুদ্রা স্বচ্ছতা নিয়ে চীনের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মান পড়ে যাওয়া নিয়ে দেশটির প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। কংগ্রেসে উপস্থাপন করা দ্বিবার্ষিক রিপোর্টে এই হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্টে চীনকে মুদ্রা নিয়ন্ত্রকের তালিকায় রাখা হতে পারেÑ এমন ধারণা থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে চলমান বাডুজ্যিক উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তবে সেই পথে হাঁটেনি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার চীনকে মার্কিন মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষকে পাল্টা পদক্ষেপ কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে তার অর্থ মন্ত্রণালয় সেরকম কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি। মার্কিন কংগ্রেসের নির্ধারিত মানদন্ড অনুযায়ী একটি বাডুজ্যিক অংশীদারকে তখনই মুদ্রা নিয়ন্ত্রকের তকমা লাগানো যাবে যখন তাদের বাডুজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে কমপক্ষে ২০০ কোটি ডলার হবে এবং এর মুদ্রাবাজারে একাধিকবার অনুপ্রবেশের প্রমাণ থাকবে।

কংগ্রেসে দ্বিবার্ষিক রিপোর্ট উত্থাপনের সময় দেওয়া এক বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী স্টিভেন টি ম্নুচিন বলেন, ‘চীনের মুদ্রা স্বচ্ছতার ঘাটতি এবং এর সাম্প্রতিক মুদ্রা দুর্বলতায় সুনির্দিষ্টভাবে উদ্বেগ রয়েছে। ন্যায্য ও সুষম বাডুজ্যের ওপর এসব কারণ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আমরা চীনের মুদ্রা রীতি পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখব।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই রিপোর্টে চীনের সঙ্গে আরও পাঁচটি বাডুজ্যিক অংশীদার দেশকে ‘পর্যবেক্ষণ তালিকায়’ রেখেছে। এই পাঁচটি দেশ হলো জার্মানি, ভারত, জাপান, কোরিয়া এবং সুইজারল্যান্ড। গত এপ্রিলে প্রকাশিত একটি তালিকার সঙ্গে এই তালিকার মিল রয়েছে। পরের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্বিবার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশিত হবে ২০১৯ সালে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট বলছে, চলতি বছর পিপলস ব্যাংক অব চায়নার সরাসরি মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ সীমিত। চীনের আনুষ্ঠানিক মুদ্রা রেনমিনবি’র সাম্প্রতিক মূল্যহ্রাস সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় বাডুজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাডুজ্য ঘাটতির পরিমাণ কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সঙ্গে ‘দারুণ বন্ধুত্ব’ থাকার কথা বললেও দুই দেশ সাম্প্রতিক বছরে বানিজ্যিক উত্তেজনায় জড়িয়েছে। দুই দেশই পরস্পরের বিপরীতে লাখ লাখ ডলারের শুল্ক আরোপ করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশেষ করে অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপ বিনিয়োগের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলেছে। অপরদিকে মার্কিন শস্যের ওপর চীনের শুল্ক আরোপের কারণে মার্কিন খামারগুলো অন্য দেশে তাদের বাডুজ্য সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাডুজ্যিক যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের মতো বর্ধনশীল অর্থনীতির ওপরে প্রভাব ফেলতে পারে, যদি তাদের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে থাকে। তবে স্বল্প মেয়াদে এটি তাদের জন্য সুবিধাজনক বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ সয়াবিনের মতো পণ্যের মূল্যহ্রাসের কারণে সস্তায় আমদানি করতে পারছে তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close