কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

  ০৭ এপ্রিল, ২০২৪

জমি জটিলতায় ভোগান্তিতে কুমারখালী-খোকসার মানুষ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জমিজমা-সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পদ্মার পারে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী। নাগরিক সব সুযোগ-সুবিধা কুমারখালীতে পেলেও জমিজমা-সংক্রান্ত কাজ সমাধা করতে যাদের পাড়ি দিতে হয় পদ্মা, যেতে হয় পাশের জেলা পাবনায়। কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চরভবানীপুর মৌজার অন্তর্গত দয়ারামপুর, হাসিমপুর, চরমহেন্দ্রপুর এবং খোকসা উপজেলার আমলাবাড়ি-কুঠিপাড়া এলাকার মানুষের এই ভোগান্তি চলছে বছরের পর বছর ধরে।

স্থানীয়রা জানান, চর ভবানীপুর মৌজার হাজার হাজার মানুষের জমি রেকর্ড, বেচাকেনা, নাম খারিজসহ অন্যান্য সব কাজে যেতে হয় পাবনায়। অথচ তারা নাগরিক সুবিধা এবং ভোট দিয়ে থাকেন কুমারখালী উপজেলায়। এসব মানুষের ভূমি জটিলতা নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। জটিলতা নিরসনে যুগের পর যুগ ধরে সরকারি অফিসে ঘুরেও সমাধান না পাওয়ায় ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

দয়রামপুর এলাকার মো. মতিউর রহমান বলেন, আমরা কুমারখালীর মানুষ। আমাদের পাবনা গিয়ে জমি রেকর্ড করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। দিনের পর দিন ধরে ঘুরতে হয় দপ্তরে দপ্তরে। তবু শেষ হয় না কাজ। অনেক সময় আবার দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে খোয়াতে হয় নগদ অর্থ।

মোহাম্মদ আলী নামের আরেকজন জানান, প্রশাসনিক সব কাজকর্ম আমরা কুমারখালী উপজেলায় করি। জমির রেজিস্ট্রি, নাম খারিজ ও খাজনা পাবনা জেলায় দিয়ে থাকি। শুধু বাড়ির ট্যাক্স কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নে দিয়ে হয়। তিনি আরো বলেন, পদ্মা নদী ও দীর্ঘ চর পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়ে পাবনা যেতে হয়। এতে আমাদের সময় ও অর্থের পাশাপাশি শারীরিক অনেক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়।

গোয়ালা রহিতোষ ঘোষ বলেন, চর পাড়ি দিয়ে পাবনা যাওয়া অনেক কষ্টের তবু জমির কাজের প্রয়োজনে যেতে হয়। আমরা কাজ করে খাই। জমির কাজে পাবনা গেলে সমস্ত দিন লাগে, যে কারণে নিয়মিত কাজের হাজিরার থেকেও বঞ্চিত হই। এমনকি একটি কাজের জন্য একাধিক বারও যাওয়ার প্রয়োজন পরে। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চান তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ ঘোষের বয়স ৮০ কোঠায়। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, অতীতে জমির কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় ঝড়ের কবলে মাঝ নদীতে নৌকা ডুবে অনেকে মারা গেছেন। জমি জটিলতার এই দুঃখ-দুর্দশা বহু বছরের। এ সমস্যা সমাধান হলে, চর পাড়ি দিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার দূরে যাওয়া থেকে রেহাই পেতেন সবাই।

কুমারখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাত বলেন, যেহেতু বিষয়টি নাগরিক অসুবিধা নিয়ে। এরই মধ্যে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওপরমহলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো জটিলতা নেই। তবে স্থানীয় জনগণ চাইলে সমস্যা নিরসন সম্ভব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close