ভাতা বৃদ্ধিসহ ৪ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের আশ্বাসে তারা আন্দোলন এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ঈদের পর বিষয়টির সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দেশব্যাপী আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ একটি সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতারা। এ সভায় ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করা, প্রতি বছর এক হাজার টাকা করে ভাতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা, হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, চিকিৎসকদের ঝুঁকিভাতা রাখা, বকেয়া ভাতা পরিশোধ করাসহ অন্যান্য দাবি তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই একটি হাসপাতালের প্রাণ। তারা খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালের রোগীদের সেবা করেন। সিনিয়র চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়ে চলে গেলে এই ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই রোগীদের নানা রকম অসুবিধাগুলোর দেখভাল করেন। কাজেই তাদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা বুঝে আমি নিজে ফাইল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী ফাইল গ্রহণ করেছেন এবং অতি দ্রুত দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির সুরাহা করতে উদ্যোগ নেবেন বলেছেন। আমি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতি এটাই বলতে চাই, তারা আন্দোলন না করে চিকিৎসা শিক্ষার কাজে মনোযোগ দিন। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তিনি ফাইল গ্রহণ করে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমরা দ্রুততম সময়ে আপনাদের ভালো খবর দিতে সক্ষম হতে পারব।

সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, দেশে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোনো ভাতা দেওয়ার নিয়ম ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ করে ২০২১ সালে ভাতা ব্যবস্থা চালু করেন। ভাতা বৃদ্ধি করা নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী দ্রুতই একটি গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির বিষয়টি আমরা অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে গ্রহণ করেছি। যদিও বর্তমানে গোটা বিশ্বেই আর্থিক সংকট চলছে, তবু সরকার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি করতে আন্তরিক রয়েছে।

সভায় পেশাজীবী চিকিৎসক নেতারা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনে তুলে নিতে অনুরোধ করেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিলে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা একযোগে আন্দোলন প্রত্যাহারে একমত পোষণ করেন।

"