প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

কুমিল্লা ও ফরিদপুর

প্রবাসী ও স্কুলছাত্র হত্যায় ৭ জনের প্রাণদণ্ড

কুমিল্লায় প্রবাসী আবদুল জলিল ও ফরিদপুরে স্কুলছাত্র আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তর হত্যায় ৭ জনের প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তিনজনকে যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুমিল্লা : কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চেৎপুর গ্রামের সৌদি আরব ফেরত স্বামী আবদুল জলিলকে (৪৫) হত্যার দায়ে তার স্ত্রী শাহনাজ বেগমসহ চার জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না, তাদের সবাই পলাতক রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবু ইউসুফ।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হোমনা উপজেলার চেৎপুর গ্রামের নিহত আবদুল জলিলের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩৫), একই উপজেলার কারারকান্দি গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে মো. কুদ্দুস (৩২), মৃত সাধন মিয়ার ছেলে মো. রাজিব (২৬) ও মঙ্গলকান্দি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে আবদুল খালেক (২৮)। তবে প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক ওই উপজেলার গোয়ারীভাঙ্গা গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে মো. শাহজাহানের (৪২) হত্যার দায় থেকে খালাস দেয়ওা হয়।

মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৯ জুন চিকিৎসা করানোর কথা বলে প্রবাস ফেরত আবদুল জলিলকে ঢাকায় নেন তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম। ঢাকা থেকে ফেরার পথে পরকীয়ার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে স্ত্রী শাহনাজের ইন্ধনে ঘাতকরা আবদুল জলিলকে হত্যা করে মরদেহ রাস্তায় ফেলে যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হোমনা থানায় হত্যা মামলা করেন।

ফরিদপুর : ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তর নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া এ মামলায় আরো তিনজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায়ও এসেছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্বপন কুমার পাল জানান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নগরকান্দার চরমানিকদি গ্রামের হাবিব বেপারির ছেলে মাহাবুব আলম, পিপরুল গ্রামের আলতাফ মাতুব্বরের ছেলে কামাল মাতুকার ও দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের মোবারক মাতুব্বরের ছেলে খোকন মাতুব্বর।

তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন পাগলপাড়া গ্রামের দুলাল শেখের ছেলে আশরাফ শেখ ও আজিজুল শেখ এবং দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে সুজন মাতুব্বর।

তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আজিজুল শেখ ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর পুলিশের পাহারায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণে বলা হয়, নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের চর মানিকদী পাগলপাড়া গ্রামের প্রবাসী আবুল হোসেনের ১৪ বছর বয়সি ছেলে আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তরকে ২০১৮ সালের ৭ জুন রাতে অপহরণ করা হয়। ৮ জুন অন্তরের মা জান্নাতি বেগম নগরকান্দা থানায় একটি নিখোঁজের জিডি করেন। ওই রাতেই অপাহরণকারীরা তার মোবাইলে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর ১৪ জুন পুলিশের উপস্থিতিতে একটি ইরি ব্লকের মেশিনঘরে টাকা রেখে তাদের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরদিন অন্তরের মা ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে নগরকান্দা থানায় অপহরণ মামলা করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close