লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা

  ০৭ মার্চ, ২০২৪

মাগুরা সদর

চিয়া বীজ চাষে সফল প্রতিবন্ধী আক্কাস

সুপারফুড চিয়া সিড চাষ করে তাক লাগিয়েছেন মাগুরা সদর উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী কৃষক আক্কাস খান। তিনি গত বছর প্রথমবারের মতো মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র থেকে চিয়া বীজ সংগ্রহ করে ৩৩ শতাংশ জমিতে চাষ করেন। ফলন হয়েছিল আশানুরূপ। ভালো ফলন পেয়ে এ বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে ১৪ বিঘা জমিতে চিয়া বীজ বপণ করেছেন। এ নতুন ফসল চাষে খরচের তুলনায় লাভ অনেক বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন মাগুরা সদর উপজেলার এ কৃষক।

তার দেখাদেখি মহম্মদপুর উপজেলার কৃষক সম্পদ বাগদীসহ অনেকে চিয়া সিড চাষে ঝুঁকছেন।

নানা ঔষধি গুণসমৃদ্ধ ‘চিয়া সিড’-এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘সালভিয়া হিসপানিকা’। চিয়া বীজকে বলা হয় সুপারফুড। চিয়া বীজে রয়েছে শর্করা, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ একাধিক খনিজ পদার্থ। এ ছাড়া একাধিক ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে ঔষধি গুণসম্পন্ন এই চিয়া সিড। ফলে শরীরে পাচনতন্ত্র ও মেটাবলিজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী চিয়া সিড। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও সহায়ক। চিয়া বীজ খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের সমস্যা কমে। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে পানির চাহিদা পূরণ থেকে ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে চিয়া বীজের গুরুত্ব অনেক।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চিয়া বীজ মধ্য আমেরিকার একটি উদ্ভিদ। পুদিনার একটি প্রজাতি। বিভিন্ন পোষক পদার্থের উপস্থিতির জন্য এটিকে সুপারফুড বলা হয়ে থাকে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চিয়া সিড বপন করতে হয়। ফলন ঘরে তোলা যায় মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে।

চিয়া বীজ চাষে দুইটা সেচ দিতে হয়। বীজ বোনার সময় একটা, অন্যটা ৪০ দিন পর। এর জীবনকাল ১০৫ দিন। চিয়া সিড উৎপাদনে জৈবসারের ব্যবহার বেশি করতে হয়।

কৃষক আক্কাস খান বলেন, চিয়া বীজ মানবশরীরের জন্য খুবই উপকারি। বাজারে এই ফসলের মূল্য অনেক বেশি। গত বছর মাগুরায় প্রথমবারের মতো ৩৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজের চাষ করেছিলাম, এবার ১৪ বিঘা জমিতে চিয়া বীজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। আশা করছি সব মিলে ৭০ মণ মতো চিয়া বীজ পাব। ১৪ বিঘা জমিতে চিয়া বীজ চাষ করতে ৮৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ চিয়া বীজ ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিয়া বীজ বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে ভালো লাভবান হবো। উৎপাদিত চিয়া বীজ আমি নিজেও খাচ্ছি।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, মাগুরার মাটি ও আবহাওয়া চিয়া বীজ চাষে অত্যন্ত উপযোগী। যে কারণে চিয়া বীজ উৎপাদনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। মাগুরা সদরের নালিয়ার ডাঙ্গি গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী কৃষক আক্কাস খান ও মহম্মদপুর উপজেলার কৃষক সম্পদ বাগদী চিয়া বীজ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন। চিয়া বীজ চাষে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলায় আগামীতে আরো বেশি কৃষককে চিয়া বীজ উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close