ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘আমার ছেলে ডিসি ইউএনওর লোক’

তোরা কেউ আমার কিছু করতে পারবি না। কারণ আমার ছেলে ডিসি-ইউএনওর লোক। তাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কিছুই লাভ নেই। উল্টো আমি তোদের এলাকা ছাড়া করে দিতে পারব। এভাবেই স্থানীয়দের হুমকি দিয়ে আসছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের এক স্কুলশিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের খালবলা বাজার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) ও খালবলা বাজারের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে যেকোনো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রতিবেশীর ওপর চড়াও হন। কেউ তার এ আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলে ছেলেকে ডিসি-ইউএনওর লোক পরিচয় দিয়ে হুমকি দেন তিনি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, নূর মোহাম্মদের একমাত্র ছেলে বখাটে জেনিফ বিভিন্ন অজুহাতে ইউএনও ও ডিসির সঙ্গে ফটো তুলে, ওই ফটো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে নিজেকে তাদের লোক বলে প্রচার করে থাকেন।

এরই মধ্যে প্রতিবেশী বজলুর রহমানের বাড়ি ঘিরে টিনের বেড়া দিয়ে পথ আটকিয়ে দেন। পিতা-পুত্রের এমন কাণ্ডের প্রতিবাদ করলে বজলুর রহমানকে মারতে তেড়ে যায়। অপরদিকে নূর মোহাম্মদের বাসা থেকে পয়ঃনিষ্কাশনের পানি বাজারের রাস্তায় আসার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় চায়ের দোকানি মনির হোসেনকে মারধর করতে যায়। বিষয়টি নিয়ে মনির হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরও অব্যাহত হুমকি দেওয়া হয়। এতে ভয় আতঙ্কে ভুগছে মনিরের পরিবার।

বিষয়টি নিয়ে খালবলা বাজারের বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, নূর মোহাম্মদ নিজের ছেলেকে ডিসি-ইউএনওর লোক পরিচয় দিয়ে হুমকি দেওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

স্কুল কমিটির সভাপতি ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীসহ প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাদের কর্মকান্ডে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। অনেক সালিস দরবারের পরও তারা নিয়ন্ত্রণহীন। আঠারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুবের আলম রূপক বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগের পর বহুবার তাদের ডেকে সাবধান করলেও কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ইউএনওর পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপ্রীতিকর কর্মকান্ডের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আঠারবাড়ির তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close