নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ অক্টোবর, ২০১৮

বর্তমানকে উৎসর্গ করেছি আগামীর জন্য : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার বর্তমানকে তিনি উৎসর্গ করেছেন তরুণ প্রজন্মের জন্য, যাদের হাতে তৈরি হবে এ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ। মুঠোফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলের সুবিধা ‘মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি’ (এমএনপি) সেবার উদ্বোধন উপলক্ষে রোববার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরে অন্য এক অনুষ্ঠানে মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদ থেকে তরুণদের রক্ষায় পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চায় সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি মিনি স্টেডিয়াম, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) কমপ্লেক্সে একটি মাল্টিস্পোর্ট ইনডোর কমপ্লেক্স ও ছয় জেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লেখাপড়ার ওপর গুরুত্ব দেই। জাতিকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষার সঙ্গে খেলাধুলা একান্তভাবে অপরিহার্য। খেলাধুলার সঙ্গে শিশু-কিশোররা যত বেশি সম্পৃক্ত হবে। আমি মনে করি, তারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবে, মানসিকভাবে দৃঢ়চেতা হবে, একটা মনোবল তারা ফিরে পাবে এবং দেশ ও জাতির জন্য গৌরব বয়ে আনবে।’

এমএনপি সেবা উদ্বোধন করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের বর্তমানকে আমি উৎসর্গ করেছি তরুণ প্রজন্মের জন্য। তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়বে। আমরা তো চলেই যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমানে যতটুকু কাজ আমরা এগোতে পারি, সেটা আমরা উৎসর্গ করেছি তরুণ প্রজন্মের জন্য।’ যারা এ দেশের ভবিষ্যৎকে গড়ে তুলবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে, তাদের চলার গতি যেন কোথাও থেমে না যায়, তা নিশ্চিত করার প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের এটাই বলব, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া শিখতে হবে। আর প্রযুক্তি ব্যবহারে আরো অভ্যস্ত হতে হবে। প্রযুক্তির ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। যত দিন যায় প্রতিনিয়ত আধুনিক প্রযুক্তি

বের হয়। আওয়ামী লীগ যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, তত দিন পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই নেবে আওয়ামী লীগ।’

তিনি আরো বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। একটা সিম থেকে যেকোনো অপারেটরে আরেকটা সিমে নাম্বার পরিবর্তন করা বা একটা অপারেটর থেকে আরেকটা অপারেটরে যাওয়ার যে আধুনিক প্রযুক্তি, পৃথিবীর খুব সীমিত দেশ এটা ব্যবহার করে। আমরা সেই যুগে প্রবেশ করছি। যদিও এটি একটা জটিল বিষয়, সেটাকে আজকে সহজভাবে করে দেওয়া হয়েছে। এই এমএনপি সেবা অনেকের জন্য সুবিধা হবে।’

অন্যদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিকেএসপির অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের যত বেশি খেলাধুলা, সংস্কৃতিচর্চায় সম্পৃক্ত করতে পারব, তত বেশি তাদের চরিত্র আরো অনেক দৃঢ় হবে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। মাদক অথবা জঙ্গি এ ধরনের কোনো বিপথে যাবে না। সেজন্য তাদের আমরা খেলাধুলার দিকে আরো সম্পৃক্ত করতে চাই।’

প্রতিটি উপজেলায় সারা বছর যেন ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করতে পারে সেজন্য একটি করে ‘মিনি স্টেডিয়াম’ নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানিয়ে তিনি বলেন, খেলাধুলার সঙ্গে ছেলেমেয়েরা সম্পৃক্ত থাকবে সেখানে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা হবে। ছোট্ট একটা জায়গা থাকবে, বাকি জায়গাটা সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকবে, যেন রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলেও কেউ দেখতে পারে সেখানে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করছে। তৃণমূলের তরুণ ক্রীড়াবিদরা যেন জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে পারে, সেজন্য এই মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা দয়াকরে জায়গা নির্দিষ্ট করে দেন। এটা কিন্তু কোনো স্কুলের জায়গা, মাঠ, কলেজের মাঠে হবে না; এটা সম্পূর্ণ আলাদা জায়গায় হবে। এই কারণে ১২ মাস খেলাধুলা চলতে পারে, সব জায়গায় খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি হবে, সেটা আমরা চাই। ৬টি সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে যুব ও যুব মহিলাদের ব্যাচেলর অব ফিজিক্যাল এডুকেশন শিক্ষা দেওয়ার পর তাদের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। প্রথম থেকে চতুর্থ পর্যায় পর্যন্ত ৬৪টি উপজেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি সমাপ্ত করেছি। পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম পর্যায়ে আরো ৬৪টি উপজেলায় কাজও শুরু হয়েছে। কাজেই ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে তারা ট্রেনিং যা পাচ্ছে, সেটাই তাদের পুঁজি। কাজ শেষে তারা উপযুক্ত কাজ পেয়ে যাবে, সে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close