রাশিয়ার একজন সুপরিচিত ঐতিহাসিক তার প্রেমিকাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন। ওই নারী তার সাবেক ছাত্রী ছিলেন।

ছাত্রীর আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই অধ্যাপক একটি নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন এবং তার ব্যাগের মধ্যে ওই নারীর হাত ছিল।

ওলেগ সোকোলফ নামে ওই অধ্যাপক মাতাল অবস্থায় নদীতে পড়ে যান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তিনি ওই নারী দেহের অংশগুলো নদীতে ফেলার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।

ছাত্রী ২৪ বছর বয়স্ক আনাস্তাসিয়া ইয়েশচেঙ্কোর বিকৃত দেহ পুলিশ পরে ওই অধ্যাপকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। প্রফেসর সোকোলফ নেপোলিয়নবিষয়ক বিশেষজ্ঞ, যাকে ফ্রান্স লেজিয়ন দ্যঅনিউর নামে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছে।

তিনি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন—তার আইনজীবী আলেকজাণ্ডার পচুইয়েভ জানিয়েছেন। আইনজীবী বলেছেন, তিনি যা করেছেন তার জন্য তিনি এখন দু:খিত এবং তিনি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন।

প্রফেসর সোকোলফ পুলিশকে বলেছেন যে, এক তর্কাতর্কির সময় তিনি তার প্রেমিকাকে খুন করেন এবং তারপর করাত দিয়ে তার প্রেমিকার মাথা, হাত ও পা কেটে ফেলেন।

বলা হচ্ছে, অধ্যাপক তার প্রেমিকার দেহ সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং তার আরো পরিকল্পনা ছিল নেপোলিয়নের সাজপোশাক পরে তিনি সবার সামনে আত্মহত্যা করবেন।

পচুইয়েভ বলেছেন, অধ্যাপক সোকোলফ হয়তো মানসিক চাপে ভুগছিলেন। নদীতে ডুবে হাইপোথার্মিয়ার শিকার হওয়ায় বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই ঐতিহাসিক নেপোলিয়নের ওপর বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন এবং কয়েকটি চলচ্চিত্রে ইতিহাসবিষয়ক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি এবং মিস ইয়েশচেঙ্কো যৌথভাবে বেশ কিছু বই ও গবেষণাপত্র লিখেছেন।

অধ্যাপক সোকোলফ এবং মিস ইয়েশচেঙ্কো দুজনেই ফরাসি ইতিহাস পড়েছেন এবং তারা দুজনেই ঐতিহাসিক সময়ের পোশাক আশাকে সাজগোজ করতে ভালবাসতেন।

তার শিক্ষার্থীরা তাকে প্রতিভাবান অধ্যাপক হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে, তিনি ভাল ফরাসি বলতেন ও বিভিন্ন সময়ে নেপোলিয়নের অভিনয় করেছেন।

তিনি ফ্রান্সের ইন্সটিটিউট অফ সোস্যাল সায়েন্স, ইকনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্স নামে প্রতিষ্ঠানের সদস্য। তারা জানিয়েছে, এই ঘটনার পর তারা তাদের বিজ্ঞানবিষয়ক কমিটি থেকে তাকে অপসারণ করেছে।

তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ওলেগ সোকোলফের ভয়ঙ্কর অপরাধের কথা জেনে আমরা বিস্মিত। কখনো ভাবতে পারিনি তিনি এধরনের নৃশংস কাজ করতে পারেন। সূত্র : বিবিসি

পিডিএসও/হেলাল