বিশেষ প্রতিবেদক, রাজশাহী

  ১৩ জুলাই, ২০২০

রাজশাহীতে পাটের আবাদ বাড়িয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। জেলায় গত বছরের তুলনায় ৯৫০ হেক্টর জমি বেশি। আবার অন্য বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে ফলনও বেশী হবে বলে আসা করছেন কৃষকরা। কিন্তু সম্প্রতি পাটকলগুলো বন্ধের ঘোষণায় চাষীরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। নায্য মূল্য পাওয়া তো দূরের কথা, পাট বিক্রি করে বিনিয়োগের টাকা পকেটে তুলতে পারবে কি নাÑ তা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর পানির অভাবে কাক্সিক্ষত স্থানে পাট পচাঁনোতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তারপরেও বিগত কয়েক বছর পাটের ফলন ও দাম ভালো পেয়েছে কৃষকরা। তাই লাভের মুখ দেখতে এ বছর রাজশাহীতে আবাদের পরিমাণও বেড়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় পাট কাটা, জাগ দেওয়াতে এখন পর্যন্ত সমস্যার সম্মুখিন হওয়ার কোন খবর মেলেনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাজারে পাট বিক্রি শুরু হবে। তবে এবার নায্য দাম পাওয়া নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন সংশয়ে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু তা বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর চাষাবাদ হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা হাটের পাইকারি ক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, পাট এখনো বাজারে উঠতে শুরু করেনি। দাম কেমন হবে পাট উঠলেই বোঝা যাবে। সরকারী পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় এবার পাটের দাম ভাল আশা করা যায় না। যদি বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমায় তাহলে বেকায়দায় পড়তে হবে।

পুঠিয়ার উপজেলার তারপুর গ্রামের কৃষক আরিফুল বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে হাল চাষ, সার, বীজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। কমপক্ষে ৩ বার জমিতে নিড়ানির মজুরি দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। পাট কাটা থেকে শুরু করে বিক্রির জন্য তৈরীতে আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা লাগছে। তারপরে এবার সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। পাট কিনবে কারা ?

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক। তিনি জানান, দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকছে কৃষক। ফলে পাটের চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। যার ফলশ্রুতিতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে এই কর্মকর্তা বলেন, সরকারি পাটকল বন্ধ। তবুও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বে-সরকারি পাট কলগুলো রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা। ফলে কৃষকদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close