আসাফুর রহমান কাজল, খুলনা

  ২৫ আগস্ট, ২০১৯

খুলনায় পাখির অভয়ারণ্য নির্মাণে একদল তরুণ

গড়ে উঠছে নগরী। কাটা হচ্ছে গাছ-গাছালি, ধ্বংস হচ্ছে পাখির আবাসস্থল। রাস্তার গা-ঘেঁষে আগের মতো গাছ নেই। পাখির কিচির-মিচির ডাকও শোনা যায় না। বিশেষ করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় বা সড়কে পাখির দেখা নেই বললেই চলে। আর যে কটি স্থানে দেখা যায়, সেখানেও তাদের বাসস্থান হুমকির মুখে।

এমন অবস্থায় ইট-পাথর আর কনক্রিটের শহরে পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাস তৈরি করছে একদল উদ্যোমী তরুণ। নগরীর যেসব গাছে এখনো পাখি বসে, সেখানে পাখিদের জন্য আবাস তৈরির পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে তারা। গত শুক্রবার সকালে নগরীর সাতরাস্তা মোড় এলাকার বাদাম গাছে ৪০টি বিশেষভাবে তৈরি মাটির কলসি বা পাখির বাসা সংযোজন করে যাত্রা শুরু করেছে তারা। চলতি সপ্তাহে নগরীর জিলা স্কুল, টাউন জামে মসজিদের আশপাশ এবং ওজোপাডিকো সদর দফতর অর্থাৎ বিদ্যুৎ অফিসের ভেতরের গাছগুলোতে এই মাটির কলসি বা বাসা সংযোজন করবে। পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল নিয়ে কাজ করা তরুণরা সবাই ‘ইজি ডোর’ নামের একটি সংগঠনের সদস্য। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে যুক্ত তরুণরাই ইজি ডোরের উদ্যোক্তা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর সাতরাস্তা মোড়ের বাদাম গাছে মাটির তৈরি পাখির বাসা বাঁধছেন বেশ কয়েকজন তরুণ। তাদের কাজে উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে এসেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স টিম। তারাও গাছের ডালে পাখির বাসা বাঁধতে সহযোগিতা করছেন। উৎসুক অনেকেই দাঁড়িয়ে তাদের কাজ দেখছেন।

উদ্যোক্তাদের একজন শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান সৈকত জানান, একসময় সাতরাস্তা মোড়ের গাছে অনেক চড়–ই পাখি বসত। দেখতে দেখতে অনেক ভবন হলো, পাখির সংখ্যাও কমতে লাগল। এখন হাতে গোনা কিছু পাখি দেখা যায়। পাখিদের নিরাপদ বাসস্থানের জন্য কী করা যায়, বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করতেই বেরিয়ে এলো নিরাপদ আবাসের পরিকল্পনা। এরপর বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে বৈঠক এবং টাকা সংগ্রহ করে প্রথম দিনে ৪০টি মাটির কলসি কিনে বাদাম গাছে লাগিয়েছি। তবে প্রথম দিনের কাজটি মোটেও সহজ ছিল না।

তার সঙ্গে থাকা মাহমুদুল ইসলাম সনেট জানান, পাখির বাসা বা মাটির কলসি গাছের ডালে বাঁধা আমাদের জন্য সহজ কাজ নয়, এজন্য আমরা ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক রাশিদুল ইসলামের শরণাপন্ন হই। তিনিও উৎসাহ দেন এবং সহযোগিতা করেন। গত শুক্রবার ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম পাখির বাসা সংযোজনের সময় আমাদের সঙ্গে ছিল। এছাড়া ফেসবুকে পাখির জন্য বাসা স্থাপনের তথ্য দেওয়ায় অনেকেই সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তরুণদের এই আহ্বান দেখে গত শুক্রবার সকালে সাতরাস্তা মোড়ে এসেছিলেন গ্লোব নার্সারির স্বত্বাধিকারী জাহের হাদী চিশতী। তিনি জানান, উদ্যোগটি আমার ভালো লেগেছে। আমাদের খুলনা শহর এখনো অনেক সুন্দর, সবুজে ঘেরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close