নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ অক্টোবর, ২০১৮

শহীদ পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

ঢাকার নবাবপুর রোডে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শহীদ এ কে এম সামসুল হক খানের পরিবারের নামে বরাদ্দ করা জমি জোর করে দখল করে ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ বিষয়ে থানা ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার ‘না পাওয়ায়’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এ পরিবারের সদস্যরা। ১৯৭১ সালে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক এ কে এম সামসুল হক খানকে ময়নামতী ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালে তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় সরকার।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সামসুল হক খানের মা মাসুদা খানমকে ঢাকার নবাবপুর রোডের ২২১ নম্বর হোল্ডিংয়ে চার কাঠার প্লটটি ইজারা দেন। পরে তিনি উত্তরসূরি হিসেবে তার আরেক ছেলে আজহারুল হক খানকে ওই জমি হস্তান্তর করেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে ওই জমিতে মাসুদা করপোরেশন ও এস এইচ কে করপোরেশন নামে দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়।

সামসুল হক খানের নাতি শামসুল হাসান খান বলেন, প্রতি বছর তারা নিয়মিত লিজের টাকা পরিশোধ করে আসছেন। ২০১৭ সালের লিজ মানির ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৫ টাকা পরিশোধ করেছেন। শেখ জাবেদ উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন ওই জমি আর বাড়ি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে থানায় একাধিকবার জিডিও করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাবেদের লোকজন জমি দখল করে প্রায় ৫ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনার পর দিনই তারা এ বিষয়ে বংশাল থানায় মামলা করেন বলে জানান শামসুল হাসান। তিনি বলেন, ওই জমির মূল মালিক ছিলেন গোপীনাথ বসাক নামে এক ব্যক্তি। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি আর ফিরে আসেননি। সরকার তখন জমিটি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করে। পুরান ঢাকায় এ রকম কয়েকশত বাড়ি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে লিজ দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু জায়গা দখলদাররা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দখল করে নিয়েছে। আমাদের জমির পাশে আট কাঠার ২২২ নম্বর প্লটও জাবেদ ও তার ভাই আবেদ দখল করে বিশাল টাওয়ার নির্মাণ করেছে। এখন আমাদের জমিটি তারা দখল করে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে।

এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি জানিয়ে শহীদ পরিবারের এই সদস্য বলেন, তারা আমাদের ৫ কোটি টাকার মালামাল লুটপাট করে ভবন ভেঙে ফেলেছে। আমরা থানায় মামলা করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ডিসির কাছে আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া পওয়া যায়নি। শামসুল হাসান খান বলেন, আমরা এখন অসহায়। এ ব্যাপারে আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে বংশাল থানার ওসি সাহিদুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘থানায় শামসুল হাসান খান বাদী হয়ে যে মামলা করেছিলেন, ওই মামলায় জাবেদ উদ্দিনসহ ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জাবেদ উদ্দিন বর্তমানে জামিনে আছেন।’ জমি দখল ও লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জাবেদ উদ্দিন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘এই বিষয় নিয়ে আমি পরে কথা বলব।’ তবে পরে কয়েকবার ফোন করা হলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close