জাবি প্রতিনিধি
ধর্ষণের হুমকি
নিপীড়নের বিরুদ্ধে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সহ পাঁচজনের শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। দোষীদের তদন্তসাপেক্ষে বিচার দাবি করছেন শিক্ষক থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও। মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অমর একুশের পাদদেশে মানববন্ধনটি শুরু হয়। এতে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক কে এম মহিউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান প্রমুখ সহ বিভাগটির ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মাববন্ধনে বক্তারা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।
গত সোমবারও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান। এসময় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নাজির আমিন জয়, ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিতি ছিলেন।
এদিকে অভিযুক্ত তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ধর্ষণের অভিযোগ আনা ছাত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনেছে। সোমবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তাঁরা। এই তিন নেতাকর্মী হলেন হামজা রহমান অন্তর, কর্মী জাহিদ হাসান ও ইশকাত হারুন। অপরদিকে ওই ছাত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মুঠোফোনে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার জুলকারনাইন বলেন, ‘ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে।’
যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, ‘আমরা ছাত্রীর অভিযোগটি পেয়েছি। তবে এখনো কাজ শুরু করিনি। আমরা সামনের সপ্তাহে বসবো।’
এর আগে গত রোববার বিকেলে ভূক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের হুমকিদাতাদের শাস্তির দাবিতে অভিযোগ পত্র জমা দেন। অভিযুক্তরা হলেন হামজা রহমান অন্তর (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, ৪১ ব্যাচ)। ইশকাত হারুন আকিব (বাংলা বিভাগ, ৪৬ ব্যাচ), জাহিদ হাসান ইমন (আইআইটি-৪৬, রিপিটার), মাসুদ রানা (মাইক্রোবায়োলজি-৩৯) ও রনি ভৌমিক (ফেসবুকে ব্যবহৃত নাম, পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি)। এদের মধ্যে হামজা রহমান অন্তর শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং ইশকাত হারুন আকিব ও জাহিদ হাসান ইমন। অভিযোগ পত্রে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘গত কয়েকদিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি গ্রুপে আমাকে ধর্ষণের হুমকি প্রদান সহ অশালীন ভাষায় আমাকে এবং আমার পরিবারকে কটুক্তি সহ হুমকি প্রদান করা হয়। তারা আমার চরিত্র হননের জন্য সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি আমার সম্ভ্রম ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতেছি।’
"