নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ বছরেও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি ফ্ল্যাট
* মামলা করার হুমকি ভুক্তভোগীদের * অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর চেষ্টা * জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ
১৯৯৭ সালে মোহাম্মদপুর ‘এফ ব্লকে’ মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আবাসন সংকট নিরসনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সহজ কিস্তিতে বরাদ্দ দেয় ফ্ল্যাট। কিন্তু ২০ বছর পার হলেও বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাট হস্তান্তরে গড়িমসি ও হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে ফ্ল্যাটের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে শর্ত ভঙ্গ করছে বলে অভিযোগ করেন মোহাম্মদপুর এফ ব্লক মালিক সমিতির আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান সেলিম। গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে মোহাম্মদপুর ‘এফ ব্লকে’ ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব অভিযোগ আনেন। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আগের নির্ধারিত মূল্যের বাইরে অতিরিক্ত এক টাকাও দেব না। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যদি শিগগির ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে আমি একজনে নয়, যারা এখনো ফ্ল্যাট বুঝে পায়নি সবাই এক একটা করে মামলা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নিম্ন ও মাধ্যম আয়ের আবাসন সংকটের কথা বিবেচনা করে মোহাম্মদপুর ‘এফ ব্লকে’ বিভিন্ন আকারে প্লট প্রতি এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকায় বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গৃহ সংস্থান অধিদফতর আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে আমরা স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকজন যথাযথ জামানতসহ আবেদন পত্র দাখিল করি। কিন্তু দীর্ঘদিনেও জাতীয় গৃহায়ন অধিদফতর এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি। ২০০১ সালে ক্ষমতার পালা বদলে পরবর্তী সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনীহা প্রকাশ করে। ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। এ ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক আবাসন সুবিধার্থে প্লটের পরিবর্তিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই অনুযায়ী, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে আবেদনকারীদের নিকট হতে ফ্ল্যাটের সম্মতি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তখন সিঁড়ি লিফট ও লবির জন্য আলাদা করে কোনো মূল্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল না। বক্তারা বলেন, সবশেষে আবেদনপত্রগুলো যাচাই বাছায় করে লটারির মাধ্যমে ৯০০ জন আবেদনকারীকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ফ্ল্যাটের জন্য বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ভবন সমাপ্তির পথে। বাকিগুলো কাজ একেবারে বন্ধ। ভবনগুলোর কাজ কবে সমাপ্ত হবে তাও অনিশ্চিত। আবার ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি যে, ফ্ল্যাটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
ফ্ল্যাটের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায় ফ্ল্যাট হস্তান্তর, বরাদ্দ গ্রাহকদের নিকট হতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ষড়যন্ত্র বন্ধ, পিপিআর মোতাবেক জামানত এবং এ পর্যন্ত দেওয়া বিলের প্রতিটি ধাপ পরীক্ষা করার দাবি জানান বক্তারা। সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদপুর ‘এ ব্লক’ ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জালাল উদ্দিন, সদস্য সচিব মো. আতাউর রহমান, সদস্য ফারুকুজ্জামান ও ইফতেখার রহমানসহ শ শ ফ্ল্যাট মালিকরা অংশ নেন।
"