ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২১ জানুয়ারি, ২০১৯

সিলেট ঘুরে আবার ঢাকায়

একটু দেরিতে হলেও জমে উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। শুরুতে ঢাকা পর্বের ম্যাড়মেড়ে ভাব চলে গেছে শেষের দিকে। ঢাকার পদাঙ্ক অনুকরণ করেছে সিলেট পর্ব। শেষদিকে জমে উঠেছে রবিন লিগ রাউন্ডের এই পর্বের খেলাও। সব মিলিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ আসর এখন জমজমাট। কোয়ালিফায়ারের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কাও শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে।

ঢাকা প্রথম ও সিলেটের একমাত্র পর্ব শেষ যথারীতি লিগ টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস। টুর্নামেন্টের চলতি আসরে সর্বোচ্চ পাঁচটি জয় আছে সাকিবের ঢাকার। চারটি করে জয় মুশফিকুর রহিমের চিটাগাং ভাইকিংস ও তামিম-ইমরুলদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের। ঢাকা ও কুমিল্লা সমান ছয়টি করে ম্যাচ খেললেও চিটাগাং ম্যাচ খেলেছে একটি কম। তবে রানরেটে এগিয়ে ঢাকার পরেই আছে চিটাগাং।

তিনটি করে জয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স ও রাজশাহী কিংসের। রানরেটে এগিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহীর চেয়ে মাশরাফিরা এগিয়ে থেকে টেবিলের চারে থাকলেও তারা ম্যাচ খেলেছে একটি বেশি, ৭টি। রংপুরের সমান ম্যাচে মাত্র দুই জয় নিয়ে কোয়ালিফায়ারের স্বপ্ন দেখছে তাসকিন-লিটনদের সিলেট সিক্সার্স। সাত ম্যাচে এক জয় নিয়ে অলৌকিক প্রত্যাবর্তনের আশায় আছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস।

ঢাকার প্রথম পর্বের খেলা শেষে চার দিনে আটটি ম্যাচ হয়েছে সিলেট পর্বে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে কয়েকটি ম্যাচই উপহার দিয়েছে রোমাঞ্চ। সেই রোমাঞ্চ শেষে বিপিএল ফিরেছে হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে। আজ ঢাকার দ্বিতীয় পর্বের দুটি ম্যাচ মাঠে গড়াচ্ছে। দুপুর দেড়টায় সাবেক চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস মুখোমুখি হবে রাজশাহী কিংস। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই হবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটস ও চিটাগাং ভাইকিংসের। দুটো ম্যাচেরই মঞ্চ শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।

ঢাকার দ্বিতীয় পর্বে দারুণ শুরুর লক্ষ্যে কাল সকালে বিসিবি একাডেমি মাঠে অনুশীলন করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের তারকা তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, শহীদ আফ্রিদিরা। পরে মিরাজের নেতৃত্বে অনুশীলন করেছে রাজশাহী কিংস। বিকেলে গা গরমের মিশনে নেমেছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটস। তিনটি দলের অনুশীলনের নেপথ্য কারণ পরশু সিলেট পর্বের শেষদিনে একটি দলেরও ম্যাচ ছিল না। তাই অন্যদের চেয়ে একটু আগেই ঢাকায় ফিরে এসেছে ফ্র্যাঞ্চাইজি তিনটি। ভ্রমণক্লান্তির কারণে কাল অনুশীলন করেনি চিটাগাং ভাইকিংস। আজ যে চারটি দলের খেলা রয়েছে তাদের মধ্যে তারাই অনুশীলনের সময় পায়নি। অবশ্য দরকার পড়েও না সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচে যে এক রকম প্রস্তুতি হয়ে গেছে তাদের।

ঢাকার এই পর্বে খেলা হবে তিন দিনে মোট ছয়টি। পরে বিপিএল যাবে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। সেখানে এরপর ২৫ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে চতুর্থ ধাপের খেলা। সাত দলের ডাবল লেগের এ আসরে ঢাকায় প্রথম পর্বে ম্যাচ হয়েছে ১৪টি; সিলেট ৮টি। অর্থাৎ রবিন লিগ রাউন্ডের অর্ধেকেরও বেশি ম্যাচের মঞ্চায়ন হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে আবার ঢাকায় ফিরবে বিপিএল। এই দুই ধাপে বিপিএলে হবে আরো ২০টি ম্যাচ। তন্মধ্যে চট্টগ্রাম পর্বেই ১০টি। দুই ধাপে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বাকি ১০টি ম্যাচ।

এই ২০ ম্যাচ শেষে সবগুলো দলই কোয়ালিফায়ারে নিজেদের রাখতে চায়। কিন্তু কোন চারটি দল উঠবে পরের রাউন্ডে? ছিটকেই বা যাবে কোন দলগুলো? এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। নানা হিসাব-নিকাশ। সমীকরণ আর পাল্টা সমীকরণ। এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের যে অবস্থা আছে, সেটাই থাকবে শেষ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এমনটাও ভাবার সুযোগ নেই। অতি নাটকীয় কিছু ঘটেনি। বড় ধরনের রদবদলও ঘটেনি। তারপরও ঢাকার পর্বের সঙ্গে সিলেট পর্বের মিল আছে সামান্যই। তবে একটা হিসাব স্পষ্ট, রবিন লিগ রাউন্ড শেষে রান রেট বড় একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগের পাঁচটি আসরেও এমন দৃশ্য নিয়মিত দেখা যায়।

তবে অন্যদের তুলনায় সিলেট সিক্সার্স ও খুলনা টাইটানসের জন্য কোয়ালিফায়ারে যাওয়া সবচেয়ে কঠিন। অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে রবিন লিগ রাউন্ড থেকেই বিদায় হতে পারে দল দুটির। শেষ চারে যেতে হলে বাকি পাঁচ ম্যাচের অন্তত চারটি ম্যাচ জিততে হবে খুলনাকে। সিলেটকেও অন্তত তিনটি ম্যাচ জিততে হবে। শুধু তাই নয়, দল দুটিকে তাকিয়ে থাকা লাগতে পারে অন্যদের দিকেও। যদিও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চায় না কোনো দলই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close