জীবনযাপন ডেস্ক

  ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯

মলিন শীতেও উজ্জ্বলতা

শীত মানেই চারদিকে রঙে রঙিন। যে রং ছড়িয়ে পড়ে ফুলের বাগান, সবজির খেত ছাড়িয়ে মানুষের পোশাকে। শীতে সব বয়সী মানুষকেই দেখা যায় রঙিন পোশাক পরতে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যে ভাটা পড়েছে আগেই। এখন সারা বছরই গরম থাকে। বছরে অল্প কয়েক মাসের জন্য শীত এসে তাই সবার জন্য উৎসবের উপলক্ষ তৈরি করে দেয়। আলমারি থেকে শুধু সোয়েটার, চাদর, জ্যাকেটই নামে না, নামে ভারী ভারী কাতান, আনারকলি কিংবা অন্যান্য ভারী পোশাক। সারা বছর এমনকি উৎসবেও আরামের জন্য সুতি, খাদি, সিল্ক বা মসলিন বেছে নিলেও শীতের উৎসবগুলোতে পাওয়া যায়

ইচ্ছেমতো সাজার স্বাধীনতা।

তবে পোশাকের ওপর আলাদা করে শীতের কাপড় পরার ফলে নিচের পোশাক ঢাকা পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে শীত কাপড়েই তৈরি করা যায় আলাদা ফ্যাশন। শীতের দিনে ছেলেমেয়ে সবারই পছন্দের তালিকায় থাকে জিন্স প্যান্ট, কেডস, বুট জুতা, টুপি, জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, মাফলার এবং স্কার্ফ। এ ছাড়া মেয়েদের জন্য নানা রঙের আর ডিজাইনের ব্যালেরিনা সু কম্ফি সু, বুট জুতাতেও তৈরি করা যায় নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্ট।

শীতের সাজে ভিন্নতা আনতে পোশাকে লেয়ারিং করা যায়। এখন বাজারে নানা ধরনের সোয়েটার এবং জ্যাকেট পাওয়া যায়। বেশি শীত পড়লে নিচে একটা খাটো সোয়েটার পরে ওপরে মাঝারি বা লম্বা আকারের পাতলা জ্যাকেট দিয়ে লেয়ারিং করতে পারেন। শীতও হার মানবে, দেখতেও দারুণ লাগবে। শীতের দিনে পালাজোর চাইতে লেগিনসেই আরাম মিলবে বেশি। শীতের দিনে শাড়ি পরা নিয়ে চিন্তায় পড়েন অনেকে। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন ফুলহাতা, গলাবদ্ধ ব্লাউজ। আবার শাড়ির ওপর চাদর না নিয়ে পরতে পারেন পঞ্চ। বেশ কয়েক বছর ধরেই জ্যাকেট আকারের ব্লাউজ চলছে বেশ। ভারী কাতান বা বেনারসি কাপড়ের জ্যাকেট আকারের ব্লাউজ পরলে শীতের হাত থেকেও বাঁচা যায় আবার সোয়েটার বা চাদর দিয়ে শখের শাড়িটা ঢাকা পড়ার কারণ থাকে না। তবে ভারী ডিজাইনের ফুলস্লিভ গলাবদ্ধ ব্লাউজের সঙ্গে শাড়িটা হতে হবে সিম্পল ডিজাইনের আবার শাড়িটা পরতেও হবে আঁচলটা ভাঁজ করে পিন দিয়ে আটকে। কেউ চাইলে একটা পাতলা চাদর ভাঁজ করে কাঁধের ওপর ফেলে রাখতে পারেন। হাতে কয়েকটা আংটি আর কানে একটা ভারী ড্রপ ইয়ার রিং কিংবা টপেই সাজ শেষ। এ ধরনের ব্লাউজের সঙ্গে চুলটা বাঁধতে হবে কিছুটা উঁচু করে যাতে ব্লাউজের ডিজাইনেই সব মনোযোগ আটকে যায়।

শীত যখন নিশ্চিন্তে সেজেগুজে দুপুরের রোদে বাইরে গেলেও মেকআপ নষ্ট হওয়ার ভয় নেই। শীতের সাজের একটা বড় অংশজুড়ে আছে রঙের বৈচিত্র্য। আমরা যে শুধু রঙিন পোশাকেই সাজি তা নয়, বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় শীতই একমাত্র সময় যখন মনের আনন্দে সাজা যায়। তবে শীতের দিনে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ও বাতাসে ধুলাবালি বেড়ে যাওয়ায় ত্বকের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ত্বক উজ্জ্বলতা হারিয়ে রুক্ষ ও খসখসে হয়ে যায়। শীতের দিনে সারা শরীরেই ময়েশ্চারাইজার মাখা উচিত। তবে শীত হলেও মুখ, গলা, হাতসহ শরীরের অনাবৃত অংশে সানব্লক মাখতে ভুলবেন না। মেকআপ করার আগে অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে। এ ছাড়াও কোনো অয়েল বেইজ প্রাইমার দিয়ে তারপর ফাউন্ডেশন দিতে হবে। শীতের দিনে মুখ তেলতেলে হওয়ার ভয় নেই, তাই এ সময়ে সেটিং পাউডার এড়িয়ে যেতে পারেন। কারো যদি টি-জোনে অর্থাৎ নাকের চারধারে, কপালে তেল জমার প্রবণতা থাকে, তবে শুধু টি-জোনেই হালকা করে পাউডার দেওয়া উচিত। এ ছাড়া শীতের দিনে শুধু বিবি বা সিসি ক্রিম দিয়েও করে ফেলতে পারেন পরিপূর্ণ মেকআপ। যদি মেকআপ করতে আলসেমিই লাগে, কিছু না হোক উজ্জ্বল লিপস্টিকেও চমৎকার লাগবে আপনাকে।

বিষণ্ন শীতকে রঙিন করতে সাজগোজ করলেও নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই শীতেও দুবেলা ত্বক পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার মাখুন। সেসঙ্গে প্রচুর পানি পান করুন ও শীতের সবজি ও ফলমুল খান। এতে মলিন শীতেও ভেতর থেকে ফুটে উঠবে উজ্জ্বলতা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close