দরোজায় কড়া নাড়ছে শীত। এখন থেকেই সৌন্দর্যচর্চায় আরো সচেতন হতে হবে। তাহলেই থাকতে পারবেন সতেজ। গরমের জন্য এত দিন যেসব পণ্য ব্যবহার করেছেন, সেগুলো বদলে নিতে হবে ধীরে ধীরে এখন থেকেই। তাই জেনে নিন শীতে রূপ ও সৌন্দর্যচর্চার খুঁটিনাটি। লিখেছেন : তামান্না ইসলাম

  ১৬ নভেম্বর, ২০১৮

শীতে রূপচর্চায় ত্বকের যত্ন

শীতে ধুলোবালি অনেক বেড়ে যায়, তাই যতটা সম্ভব ত্বক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে। শীতকালে ত্বক কখনো কখনো অদ্ভুত আচরণ করে, এতে ত্বকে মিশ্র একটা ভাব দেখা দিতে পারে। মুখের টি জোন অর্থাৎ নাক-কপালের অংশ ছাড়া বাকি জায়গা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে নিতে হবে বাড়তি যত্ন। যদি ত্বকে মিশ্র ভাব দেখা দেয়, তবে সাধারণত যে ফেসওয়াশ গরমকালে ব্যবহার করেছেন, সেটাই রাখুন। তবে তা শুধু টি-জোনটুকুর জন্যই। বাকি শুষ্ক জায়গায় সাধারণ ফেসওয়াশ বা ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে ধোবেন। একটু বেশি শুষ্কতা দেখা দিলে ক্রিম ক্লিনজার, ক্লিনজিং মিল্ক অথবা গ্লিসারিন বার ব্যবহার করুন। প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার আগে দেখে নিন আপনার সঙ্গে ক্লিনজিং ওয়াইপস বা ওয়েট টিস্যু আছে কি না। প্রয়োজনে দরকার মতো মুখ মুছে নেবেন। এ সময় ত্বক অনেকাংশেই উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। প্রতিদিন মাইল্ড স্ক্রাব ব্যবহার করতে ভুলবেন না। তৈলাক্ত ত্বকে জেল বা হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, যেগুলোতে তেলের পরিমাণ কম, পানির পরিমাণ বেশি। ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ত্বকের প্রয়োজনীয়তা বুঝে নিতে হবে।

শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে ভারী ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কড়া রোদ থাকে, এ কারণে সানস্ক্রিন লোশন অবশ্যই ব্যবহার করতে ভুলবেন না। কম পক্ষে ৫০+ এসপিএফ আছে এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। ৩-৪ ঘণ্টা পরপর মুখ মুছে নিয়ে নতুন করে লাগাতে হবে। কারণ, সানস্ক্রিন ৩-৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করে না । যদি মেকআপ করেন তবে অবশ্যই তা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। মেকআপ তুলতে বেবি অয়েল বা মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করুন এবং শেষে হালকা গরন পানি ও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালো কোনো নাইট ক্রিম অথবা এর বদলে আমন্ড অয়েল লাগাতে পারেন। আমন্ড অয়েল ত্বক ময়েশ্চারাইজ যেমন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে, তেমনি বয়সের ভাঁজ কমানো, ব্রণ অথবা দাগ দূর করতেও সাহায্য করবে।

ত্বকের যত্নের কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি

* কলা পেস্ট করে লাগালে শুষ্ক ত্বকে প্রাণবন্ত ভাব ফিরে আসবে। মধুও শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব উপকারী। টমেটোর রসের সঙ্গে একটু মধু পেস্ট করে নিন। অনেক ভালো ফল পাবেন।

* তৈলাক্ত ত্বকে শশার রস চমৎকারভাবে কাজ করবে। শশার রসের সঙ্গে মুলতানি মাটি ও চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে লাগান। এতে যেমন তেলতেলে ভাব কমবে, সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতাও ফিরে আসবে। পেঁপে পেস্ট করে ১০-১৫ মিনিটের জন্য মুখে দিয়ে রাখুন। ত্বকের পোড়া ভাব দূর করবে। গাজর পেস্ট করে ১০ মিনিটের জন্য লাগালে উপকার পাবেন। চন্দন পেস্ট করে লাগান। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পরে ধুয়ে নিন।

* সাধারণ থেকে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দুধের ক্রিম অথবা ত্বক দইয়ের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপের পানি মেশান। মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে মাস্কটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন। কলা পেস্ট করে মধু মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

* নারকেল তেল কিন্তু ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফেরাতে চমৎকার কার্যকর। মুখে নারকেল তেল লাগান। সুতির রুমাল গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালোমতো নিংড়ে নিন। মুখের ওপর দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। মুখটা মুছে নিয়ে এবার গোলাপজল লাগিয়ে নিন। সব ধরনের ত্বকেই এটি মানিয়ে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close