নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হোন

প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চাকরির পেছনে ছোটার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। যুব সমাজকে চাকরি করার চেয়ে চাকরি দেওয়ায় মনযোগী হতে হবে। এজন্য মেধাবী কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে শিক্ষাগত সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করেছি। গতকাল রোববার তার তেজগাঁও কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ষষ্ঠ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজকে দক্ষ এবং যোগ্যতা সম্পন্ন করে তোলার লক্ষ্যে ট্রাস্টের কাছ থেকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে, কারণ যাতে করে তারা চাকরির পেছনে না গিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা নিলে তরুণরা প্রশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দ্রুত স্বাবলম্বী হবে। শিক্ষা সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হলে এবং প্রচার করা হলে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হবে।

নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তরুণদের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাকরির পেছনে দৌড়াতে মানসিকতা পরিহার করতে হবে তরুণরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। সরকারি বৃত্তি, উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সহায়তা কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলোর বিষয়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সিট ক্যাপাসিটি অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছামতো অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে, এটা যেন না হয়।

উপবৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য আপডেট করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দায়িত্ব প্রদানের নির্দেশনাও দেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সক্ষমতা অনুযায়ী ভর্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারি না যে, শিক্ষার্থীরা কীভাবে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা করছে। ট্রাস্টের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. আখতারুজ্জামান, ইউজিসি চেয়ারম্যান (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব নাসরিন আফরোজ ট্রাস্টের সার্বিক কর্মকা- এবং ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে বৈঠকে জানান। প্রসঙ্গত, অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করা হয়। ২০১১-১২ অর্থবছরে ট্রাস্টের সিড মানি হিসেবে ১ হাজার কোটি টাকা প্রদান করা হয়। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ট্রাস্ট থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার জন্য ইতোমধ্যে ৫৫০ দশমিক ৯০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ট্রাস্ট এ বছর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৯ হাজার ৬০০ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১১১ দশমিক ৪০ কোটির অধিক অর্থ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close