নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ অক্টোবর, ২০১৯

অস্ত্র মামলা

জি কে শামীম-খালেদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

অস্ত্র মামলায় কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার জি কে শামীম এবং বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। মামলা করার এক মাসের মাথায় সম্প্রতি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আদালত সূত্র বলছে, জি কে শামীমসহ তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল রোববার অভিযোগপত্র জমা দেন র‌্যাব-১ এর উপপরিদর্শক (এসআই) শেখর চন্দ্র মল্লিক। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন র‌্যাব-৩ এর কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন। জি কে শামীমসহ তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার সহযোগীরা উচ্চ বেতনভোগী দুষ্কর্মের সহযোগী। তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্রশস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। আসামি শামীম অস্ত্রের শর্ত ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদক ব্যবসা ও মানিলন্ডারিং করে আসছিলেন। অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত শামীমের সাত দেহরক্ষী হলেন নওগাঁর দেলোয়ার হোসেন, গোপালগঞ্জের মুরাদ হোসেন, বাড্ডার জাহিদুল ইসলাম, যশোরের শহিদুল ইসলাম, ভোলার কামাল হোসেন, নীলফামারীর সামসাদ হোসেন ও বাগেরহাটের আমিনুল ইসলাম।

গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানের নিকেতনে অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা শামীমসহ তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করে র?্যাব।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ঢাকা মহানগর যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। আর ২০১২ সালে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তখন থেকে খালেদ বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। ঢাকার মতিঝিলের ইয়ংমেনস ক্লাব, আরামবাগ ক্লাবসহ ফকিরাপুলের অনেক ক্লাবে ক্যাসিনোর আসর বসিয়ে রমরমা মাদক ব্যবসাসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন তিনি। এসব অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।

খালেদ খিলগাঁও-শাজাহানপুর চলাচলকারী গণপরিবহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। কোরবানির ঈদের সময় শাজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া, কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে রাজউক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রেল ভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ফকিরাপুলসহ বেশির ভাগ এলাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ মাহমুদ। মাদক ব্যবসা, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি করার জন্য গড়ে তোলেন বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, দুটি অস্ত্রের লাইসেন্সে ৫০টি করে গুলি কেনার হিসাব থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তার হেফাজত থেকে শর্টগানের সাতটি এবং পিস্তলের ৯টি অতিরিক্ত গুলি উদ্ধার করা হয়। এগুলো ২০১৭ সালের পর নবায়ন করা হয়নি। এগুলো অবৈধ অস্ত্র। অবৈধ টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা পরিচালনার জন্য খালেদ এসব অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করতেন। অবৈধ ব্যবসা ও রাজনৈতিক দাপটে পেশিশক্তি প্রয়োগ করার জন্যই দীর্ঘদিন অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করে আসছিলেন। মামলায় ১৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর মাদক, অস্ত্রসহ গ্রেফতার হন যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close