নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

আ.লীগের প্রতিক্রিয়া

ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার জাতির সঙ্গে তামাশা

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলমান রাখা এবং দুর্নীতি রোধের অঙ্গীকার ‘জাতির সঙ্গে তামাশা’ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। গতকাল সোমবার ঐক্যফ্রন্ট ইশতেহার ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলমান রাখা এবং দুর্নীতি রোধ করার যে অঙ্গীকার এসেছে, আওয়ামী লীগ তা কীভাবে দেখছে। জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের উত্তসূরিদের নিয়ে তারা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছে। আর যুদ্ধাপরাধীরা ঐক্যফ্রন্টের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই আছে। সুতরাং যুদ্ধাপরাধের বিচার তারা করবেÑ এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার, অবিশ্বাস্য। একাত্তরে বাংলাদেশের বিরোধিতায় যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেওয়া জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার আহ্বানে কখনো সাড়া দেননি বিএনপি নেতারা। বরং উল্টো যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তারা সমালোচনাও করেছেন। সেই বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে গত অক্টোবরে সাবেক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা একে ‘সাম্প্রদায়িক জোট’ আখ্যায়িত করেছিলেন।

জোটের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন সে সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে কোনো ‘বৃহত্তর ঐক্যে’ তিনি যাবেন না। কিন্তু নির্বাচনের আগে জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের চেয়ে জামায়াতই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিএনপির কাছে।

নিবন্ধন হারানোয় জামায়াতের অন্তত ২২ জন প্রার্থী এবার ভোট করছেন বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। কামাল হোসেন নিজে নির্বাচন না করলেও তার দল গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিকরাও একই প্রতীকে ভোট করছেন এবার। সেই প্রসঙ্গ টেনে আব্দুর রহমান বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে মনোনয়ন পর্যন্ত দিয়েছে, তারা কী করে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে? এটা জনগণের সঙ্গে নেহায়েত প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না। জাতিকে ‘বিভ্রান্ত’ করে এই ইশতেহারের মাধ্যমে ঐক্যফ্রন্ট ভোটারদের সঙ্গে ‘তামাশা করছে’ বলে মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। তিনি বলেন, তারেক জিয়া দুর্নীতির দায়ে দন্ডিত, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন হাওয়া ভবন তৈরি করে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) নিজে দুর্নীতির দায়ে দন্ডিত। তাদের মুখে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার কথা ভূতের মুখে রাম নাম।

ঐক্যফ্রন্টের প্রতিশ্রুতিকে ‘রাজনৈতিক অপকৌশলের ইশতেহার’ হিসেবে বর্ণনা করে আব্দুর রহমান বলেন, দেশের মানুষ কোনোভাবেই বিশ্বাস করে না যে, তারা দুর্নীতি দূর করবে, এটা ভোটের রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করার জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপকৌশল মাত্র।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কামাল হোসেন যে সংশয় প্রকাশ করেছেন, তার পেছনেও চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়েছে, তাদের মনোনয়ন বাণিজ্যে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর তারা এর দায়ভার, দোষ আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আব্দুর রহমান বলেন, এই নির্বাচন বানচালের জন্য নানা চক্রান্তের জাল বুনছে তারা। যারা নির্বাচন বানচালের চক্রান্তে আছেন তাদেরকে হুশিয়ার করতে চাই, যেকোনো মূল্যে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close