বেরোবি প্রতিনিধি

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বেরোবি উপাচার্যের গভীর রাতে ক্লাস বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস নেন। গত রোববার তিনি রাত ১২টার দিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস শেষ করেন। গভীর রাতে ক্লাস শেষে মেসে ফেরার পথে ছিনতাইকারীর হামলায় এক শিক্ষার্থী আহত হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানাজানি হলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে গভীর রাতে ক্লাস বন্ধের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযের্র বাসভবন ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে রাত ১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

জানা যায়, রোববার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস শেষ করেন উপাচার্য। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হল থেকে শিক্ষার্থীরা নেমে এসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক হয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন তারা। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে রাত দেড়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে ছয় শিক্ষার্থী উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান। উপাচার্য ক্যাম্পাসে অবস্থান না করে মাঝেমধ্যে ক্যাম্পাসে এসে গভীর রাত পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ তুলেন শিক্ষার্থীরা ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুয়া বলেন, ‘উপাচার্য স্যার দীর্ঘদিন ধরে গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মেয়েদের ঝুঁকিটা বেশি। যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে এর দায়ভার নেবে কে? তাই আমরা চাই শিক্ষার্থীদের এ ধরনের হয়রানি থেকে মুক্ত দেওয়া হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুয়েল আহমেদ বলেন, উপাচার্য স্যার যদি সময় পান, তাহলে তিনি দিনে ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হতো। রাতে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে গভীর রাত পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ বলেন, ‘উপাচার্য স্যার প্রায় সময়ই গভীর রাতে ক্লাস নেন। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে বিভিন্ন সময় নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এটা মানা যায় না। তার প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ করছি।’ শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তারা বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা আমাদের জানা নেই।’

আহত শিক্ষার্থীর বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীরা না চাইলে রাতে ক্লাস নেওয়া হবে না বলে উপাচার্য জানিয়েছেন।’ পরে রাত আড়াইটার দিকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close