নিজস্ব প্রতিবেদক
বেড়েছে আদা-রসুনের ঝাঁজ মরিচ-সবজির দাম কমেছে
মৌসুমের আগেই শিম, তাই দামও চড়া
কোরবানির ঈদের আগেই বেড়েছে রসুন ও আদার ঝাঁজ। খুচরা বাজারে গেল সপ্তাহের চেয়ে রসুন কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০ টাকা আর পেঁয়াজের দামও বেড়েছে ৫ টাকা। এদিকে, বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মসলার দাম। ঈদের আগে আরো বাড়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আর মরিচ ও সবজির দাম কমেছে। এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মাংসের বাজারে ক্রেতা সমাগম কিছুটা কমেছে। ফলে মাংসের বাজার আগের মতোই রয়েছে।
গত সপ্তাহেও দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি আর আমদানি করার দাম ছিল ৫৫ টাকা। গতকাল সেই দেশি রসুনই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর বিদেশি রসুনের দাম ৬০-৬২ টাকা। অন্যদিকে, আদার দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা। খুচরা বাজারে শ্রীলঙ্কান আদা ৯০ এবং চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। তবে দেশি এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। এদিকে মসলার বাজারে ধনে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। জিরার দাম ২০ টাকা বেড়ে ৪০০। লবঙ্গ কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৩০০, দারচিনি ২০ টাকা বেড়ে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এলাচের দাম ৪০০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়।
দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসায় রাজধানীব্যাপী কমতে শুরু করেছে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। মরিচের ঝাঁজও কমে এসেছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, হাতিরপুল, শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বন্যা, অতিবৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে উচ্চমূল্যে বিক্রি হলেও অবশেষে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কমে এসেছে কাঁচামরিচের দাম। সরবরাহ ঠিক থাকলে মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মরিচের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া মরিচ বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের অজুহাতে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়েছে প্রতিটি সবজি। গত সপ্তাহে বাজারে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া সবজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম ছিল। ঢাকায় ট্রাক মালিকরা ট্রাক পাঠাতে আতঙ্কে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে রাজধানীসহ সারা দেশে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করায় বাজারে সব রকম সবজির সরবরাহ ভালো। তাই দাম কমতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পটোল ৪০, ঢেঁড়স ৫০, কাঁকরোল ৫০, পেঁপে ৩০, বেগুন ৪০, গোল বেগুন ৫০, শসা ৪০, টমেটো ৮০, করলা ৫০ টাকা এবং প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতোই খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়।
স্থিতিশীল আছে চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণসহ নিত্যপণ্যেরও দাম। তবে মাছের বাজারে ইলিশের দাম সামান্য কমলেও দেশীয় এবং সামুদ্রিক মাছের দাম আগের মতোই চড়া। স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মুরগির দাম। বাজারে গত সপ্তাহের মতো বয়লার মুরগি ১৫০-১৫৫ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি জোড়া কর্ক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা।
চড়া দামে শিম : মৌসুমের আগেই বাজারে এসেছে শিম ও ফুলকপি। তবে দাম একটু চড়া। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। ১৬০ টাকার শিমের যে স্বাদ তা ২০ টাকা কেজির শিমে পাওয়া যাবে না। একসময় এই শিমই ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়। ছোট আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। আর পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়।
"