আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ মার্চ, ২০১৮

সি জিনপিং চীনের ‘আজীবন প্রেসিডেন্ট’

প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ তুলে দিয়ে ‘আজীবন প্রেসিডেন্ট’ বিল পাস করেছে চীন। গতকাল রোববার চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপলস পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশনে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে পিপলস কংগ্রেসের প্রায় ৩ হাজার প্রতিনিধির মধ্যে ২ হাজার ৯৬৪ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। দুজন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন এবং তিনজন ভোট দানে বিরত থাকেন। আর এই ভোটাভুটির মধ্য দিয়েই বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার পথ খুলে গেল। তবে এভাবে ‘আজীবন প্রেসিডেন্ট’ বিধানের বিরুদ্ধে সমালোচনা উঠছে চীনের বিভিন্ন মহল থেকে।

চীন ১৯৯০ সাল থেকে দুই মেয়াদ প্রেসিডেন্ট থাকার বিধান আরোপ করে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে সংবিধান থেকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মেয়াদ-ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত সি জিনপিংয়ের মেয়াদ ছিল। সি জিনপিং তার রাজনৈতিক ক্ষমতাকে দিনে দিনে আরো দৃঢ় করেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা মাও সেতুংয়ের চেয়েও সি জিপিংয়ের নাম ও রাজনৈতিক আদর্শকে সমুন্নত করতে তার পক্ষে দল সমর্থনও দিয়েছে। বড় ধরনের কোনো বিরোধিতা ছাড়াই বিলটি পাস হয়ে গেছে। অন্য দেশের পার্লামেন্টের মতো কংগ্রেস হচ্ছে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী আইন প্রণয়নের ক্ষমতাবিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান। তবে চীনে কংগ্রেসকে ‘রাবার স্ট্যাম্পিং’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা হয়। এই বিল পাসের মধ্য দিয়ে সেটিই যে প্রমাণিত হলো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত মাসে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি সংবিধান সংশোধনের ওই প্রস্তাব আনার পর তা যে পাস হবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহই ছিল না। ১৯৯০ এর দশকে চীন প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সীমা বেঁধে দেয়। সংবিধান অনুযায়ী দেশটির কংগ্রেস চীনের সর্বোচ্চ আইন পরিষদ।

ইতিহাসবিদ ও রাজনীতির বিশ্লেষক ঝ্যাং লিফানের মতে, সি জিনপিংকে ক্ষমতায় রাখতে সংবিধান সংশোধনের এই উদ্যোগ আগেই অনুমান করা যাচ্ছিল। কিন্তু কত বছর তাকে ক্ষমতায় রাখার কথা চিন্তা করা হচ্ছেÑ তা নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন। থিওরি অনুযায়ী তিনি জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের চেয়েও বেশি সময় রাজত্ব করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভবিষ্যতে কী হবে তা কেউ বলতে পারে না।

জিম্বাবুয়েকে ৩৭ বছর শাসন করা মুগাবে গত বছর গণবিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের পর দলের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। চীনের অনেক নাগরিক অনির্দিষ্টকালের জন্য এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার বিষয়টি পছন্দ করেননি।

সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব ওঠার পর দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবুতে একজন লেখেন, যদি দুই মেয়াদ যথেষ্ট না হয়, তাহলে তারা তিন মেয়াদের কথা লিখতে পারে। কিন্তু সেখানে অবশ্যই একটা সীমা থাকতে হবে, একেবারে মুক্ত করে দেওয়া ভালো হবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist