ঢাবি প্রতিনিধি
মামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীরা রাস্তায়
‘আমি আন্দোলনকারী আমাকে গ্রেফতার কর’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় ঘেরাওয়ের সময় ফটক ভাঙচুরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে গভীর রাত থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকজন ছাত্র। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাজীব কুমার দাশ এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহির শাহরিয়ার রেজা গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের বেদীর ধাপে বসে আছেন। তাদের সঙ্গে আছেন আরো কয়েকজন।
তাদের দুই পাশে দুটি প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘আমি ভাঙচুরকারী আমাকে গ্রেফতার কর’, ‘আমি আন্দোলনকারী আমাকে গ্রেফতার কর’।
রাজীব বলেন, আমিও ওই দিনের ঘটনায় ভাঙচুর করেছি, আন্দোলন করেছি। প্রশাসন, পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করুক। বিশ্ববিদ্যালয় নিপীড়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই প্রক্টরের পদত্যাগ চাই। ঢাকার সাত সরকারি কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর সোমবার উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে চড়াও হয় ছাত্রলীগ। ওই দিন ‘হামলাকারী’ ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রীদের নিপীড়ন করে বলেও আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। এর প্রতিবাদে ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বুধবার প্রক্টর কার্যালয় ঘেরাও করতে যায় একদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও ওই কর্মসূচিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের আসতে দেখে ওই কার্যালয়ের ফটকে তালা দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেট ভেঙে ফেলেন। ‘ছাত্রী নিপীড়নে’ জড়িত ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে তদন্ত কমিটি করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিতে প্রক্টরকে তিন ঘণ্টা তারা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান প্রক্টর। উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সেখান থেকে ফিরে যায় আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, ছাত্রী নিপীড়নের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান। এছাড়া কলাভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় গঠন করা হয়েছে আরেকটি তদন্ত কমিটি।
এই পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান খান ফটক ভাঙচুরের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। কারো নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয় ৫০ জনকে আসামি করা হয় সেখানে।
"